শপথ নিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট জর্জিয়ার, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট যেতে রাজি না!
জর্জিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট মিখাইল কাভেলাশভিলি শপথ নেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানী তিবলিসিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। অন্যদিকে, দেশটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সালোমে জোরাবিচভিলি রোববার পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেন এবং বলেন, "আমি একমাত্র বৈধ প্রেসিডেন্ট।"
নতুন প্রেসিডেন্ট মিখাইল কাভেলাশভিলি সাবেক ফুটবলার এবং সরকারপন্থী জর্জিয়ান ড্রিম পার্টির সাবেক এমপি। তার শপথ অনুষ্ঠান এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঘটেছে, যখন দেশটির সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের আবেদন স্থগিত করেছে। অক্টোবরের পার্লামেন্ট নির্বাচন জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি জয়লাভ করলেও, ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের পর দেশটিতে প্রতিবাদ শুরু হয়।
রোববার সালোমে জোরাবিচভিলি পদত্যাগ করতে অস্বীকার জানানোর কিছু মিনিট পর কাভেলাশভিলি পার্লামেন্টে শপথ নেন। তার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে উপস্থিত ছিলেন।
শপথ নেওয়ার পর কাভেলাশভিলি জর্জিয়ার ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, জাতি পরিচয়, পরিবার এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, "আমাদের ইতিহাস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, অসংখ্য সংগ্রামের পর আমাদের মাতৃভূমি এবং ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য সবসময় জর্জিয়ান জনগণের প্রধান লক্ষ্য এবং মূল্যবোধের একটি প্রধাণ বিষয় ছিল শান্তি।"
এদিকে, জর্জিয়ার চারটি প্রধান বিরোধী দল কাভেলাশভিলির শপথকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা পার্লামেন্ট বর্জন করেছে। কাভেলাশভিলি ছিলেন একমাত্র প্রার্থী। জোরাবিচভিলি তার নির্বাচনের সমালোচনা করেছেন।
জর্জিয়ান ড্রিম পার্টির বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরে আরও স্বৈরাচারী হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা রুশ ধরানার আইন পাশ করেছে, যা গণমাধ্যম এবং বিদেশী তহবিল পাওয়া এনজিওকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ আক্রমণের পর তারা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেয়নি।
জর্জিয়ার অধিকাংশ জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পক্ষে। দেশের সংবিধানেও এই লক্ষ্য রয়েছে। তবে, সরকার ঘোষণা করেছে, যে তারা ২০২৮ পর্যন্ত ইইউ সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা শুরু করবে না।
শনিবার, বিক্ষোভকারীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা নিয়ে জমায়েত হয় এবং মানববন্ধন করেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, "আমরা রুশ সাম্রাজ্যের কবল থেকে দেশটিকে মুক্ত করতে রাস্তায় নেমেছি।"
এই সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদজিনা ইভানিশভিলির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
জর্জিয়া একটি সংসদীয় গণতন্ত্র, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী সংসদের প্রধান। ২০১৮ সালে জোরাবিচভিলি প্রেসিডেন্ট হন। তবে তিনি বর্তমানে জর্জিয়ান ড্রিম পার্টির নির্বাচনের সমালোচনা করছেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে আন্দোলন করছেন।