প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে: ইসি সচিব
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় সূচি অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ে কমিশন ভবনে ইউএনডিপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি করছে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সচিব বলেন, এ বিষয়টা আমার জানা নেই। এটা আমার আওতার মধ্যে পড়ে না।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের প্রস্তুতি যেটা নেয়া হচ্ছে, সেটা হলো প্রধান উপদেষ্টা যে টাইম ফ্রেম দিয়েছেন সেই ভাবে আমরা কাজ করছি'
ইউএনডিপির নির্বাচনী সহায়তা
ইউএনডিপির প্রতিনিধি দলের কাছে কী ধরনের প্রস্তাব করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, আমরা ডেলিগেশিনকে কিছু প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি, এগুলো সবই সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, 'তারা আজ বিষয়টি পর্যালোচনা করতে এসেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করার পরে ১০ দিনের মধ্যে একটি প্রস্তাব নিয়ে ফিরে আসবেন তারা। আগামী ১০ দিন পর আমরা আবার বৈঠকে বসব।'
আখতার আহমেদ বলেন, 'তারা (ইউএনডিপি) এখানে একটি অফিস স্থাপন করেছেন। কারণ আমরা যদি তাদের বাড়িতেই ঢুকতে না দেই, তাহলে তারা ঘরের কাজ করতে পারবে না।'
তিনি বলেন, 'ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর ভোটার তালিকা প্রমিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'এছাড়াও হালনাগাদ কার্যক্রমের জন্য কিছু উপকরণের সংকট রয়েছে, আমরা সেগুলো সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা ঘরে ঘরে তথ্য সংগ্রহ করতে যাবে না। আমরা তথ্য সংগ্রহ করার পর, তারা কাস্টমাইজেশনে সহায়তা করবে।'
ইসি সচিব বলেন, ইউএনডিপি থেকে যে সহায়তা আসবে সেগুলো হলো প্রযুক্তিগত সহায়তা; যার মধ্যে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং এসডিজি অর্জনে কিছু সহায়তা।
তিনি আরও বলেন, 'ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে কোনো সহায়তা সম্পর্কে আলোচনা হয়নি।'
আখতার বলেন, তারা শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য অনুরোধ করেছেন। 'কোনো আর্থিক সহায়তার জন্য অনুরোধ করা হয়নি।'
জাতিসংঘ কী বলছে
বৈঠক শেষে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস সাংবাদিকদের বলেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়ে ইসি জাতিসংঘকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে।' জাতিসংঘ কী ধরনের টেকনিক্যাল (কারিগরি) সহায়তা দিতে পারে এ বিষয়ে সিইসির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা নিউইয়র্ক থেকে একটি নিড অ্যাসেসমেন্ট মিশন নিয়ে আজ ইসি সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমাদের সহকর্মীদের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর আমরা সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ এবং রাজনৈতিক দলসহ আরও কিছু স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আগামী কয়েকদিন আলোচনা করব।'
লুইস বলেন, 'এক্ষেত্রে কিছু প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে। ইসি সিদ্ধান্ত নেবে তাদের কোন ধরনের সহায়তা প্রয়োজন।'
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, 'এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কমিউনিকেশন্স সহায়তা, ডিসইনফরমেশন প্রতিরোধ, তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার, ট্রান্সপোর্ট সহায়তাসহ অন্যান্য বিষয়ের কথা জানিয়েছে। জাতিসংঘ এ ব্যাপারে কী করতে পারবে তা পর্যালোচনা করে বাংলাদেশকে জানাবে সফররত পর্যালোনা দলটি।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিশন ১০ দিনের মধ্যে তার মূল্যায়ন শেষ করবে এবং ফিরে এসে নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করবে।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের শেষ বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।