শিক্ষার্থী ভর্তিতে জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করবে বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান শুক্রবার জানিয়েছেন, ‘জালিয়াতি’ করে সান্ধ্যকালীন কোর্সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩৪ কর্মী ভর্তির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করবে।
তিনি বলেন, “এ-সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, এ কমিটি আসলে কী ঘটনা ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা করবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের অধীনে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন উপাচার্য।
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসে একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান ৩৪ নেতাকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ভর্তিপরীক্ষা ছাড়া ভর্তির সুযোগ দেবার অভিযোগ ওঠে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সামনে রেখে এ অনিয়ম করা হয় বলে ৮ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধীনে পরিচালিত মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ওই ৩৪ জনকে ভর্তি করিয়েছে বলে জানা যায়।
১৭ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। ডাকসুর আট নেতাসহ ৩৪ শিক্ষার্থী নিয়ম মেনেই 'সান্ধ্যকালীন এমবিএ' কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
ডিন বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে যে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে তাদের কাউকেও বাইরে থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেবার সুযোগ দেওয়া হয়নি।তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট ছাত্রছাত্রী। তারা গ্রাজুয়েশন শেষ করে মাস্টার্স করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অবশ্য বাণিজ্য অনুষেদের ডিনের বক্তব্য মেনে নেননি। তারা ডিনের পদত্যাগ দাবি করেছেন।এই দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে।
ওদিকে, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিনের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিলেন।ভর্তি জালিয়াতির প্রতিবাদ এবং ডিন অধ্যাপক ড. শিবলি রুবাইয়াতুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে ডিনের কার্যালয় ঘেরাও করতে যান তারা। সেখানে তাদের বাধা দেয় ছাত্রলীগ। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এই কর্মসূচিতে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, সাধারণ ছাত্র পরিষদসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সদস্যদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হবার অভিযোগ করেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রক্টরের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।