ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক, যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা প্রথমবারের মতো নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) প্রধান দলজিৎ সিং চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার জন্য ১৬ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারত সফর করবেন।
বিজিবি প্রধানের সফরের আগে আগামী ১০-১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ইন্ডিয়া এনার্জি উইক ২০২৫-এ অংশ নিতে ভারত সফর করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।
গত অগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এটিই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ ও বিজিবি প্রধানদের আসন্ন বৈঠকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে রয়েছে—সীমান্তে 'সিঙ্গেল রো ফেন্স' (এসআরএফ) বাস্তবায়ন, যা ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়াবিহীন এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করতে চায়।
তবে সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উভয়পক্ষ কোনো প্রতিরক্ষা কাঠামো নির্মাণ করবে না মর্মে বেড়া নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছে বিজিবি। এদিকে, গত ১৩ জানুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সিনিয়র কূটনীতিককে তলব করে জানায়, সীমান্তে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান চুক্তি ও প্রোটোকল মেনেই করা হয়েছে।
বৈঠকে মাদক ও গরু পাচার এবং মানব পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান মোকাবিলার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ অংশে মানবপাচারে জড়িত উপাদানগুলোর ওপর বিজিবি সক্রিয়ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে বিজিবি প্রধানকে বলা হবে, অবৈধ অভিবাসন ও চোরাচালান বন্ধে বর্ধিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৪,০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে– যা পাহাড়, নদী এবং উপত্যকার মতো দুর্গম অঞ্চল দ্বারা চিহ্নিত। এসব অঞ্চলে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ এবং অবৈধ অভিবাসনকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধ অভিবাসন এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধ করার জন্য ভারত সরকার ফ্লাডলাইট দিয়ে সীমান্তের বেড়া পর্যায়ক্রমে নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৯৬. ৭ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশগ্রহণের পাশাপাশি জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে জ্বালানি সংযোগ ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।