নবায়নযোগ্য ৩১ বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি বাতিলে হাইকোর্টের রায় আমলে নেওয়া হয়নি
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া ৩১ কোম্পানির সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি চুক্তি বাতিলে কালক্ষেপণ করেনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর আওতায় এসব চুক্তি করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে হাইকোর্টের একটি রায় আমলে না নিয়ে— পিডিবি দরপত্র প্রক্রিয়ায় গেছে।
সংক্ষিপ্ত রায়ে আইনটির দুটি বিধান বাতিল করেন হাইকোর্ট। কিন্তু, পূর্ণাঙ্গ রায়ে অতীতের প্রকল্পের পদক্ষেপগুলো ক্ষমা করা হয়। তবে কোনো কোম্পানির প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, সেটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বলেন আদালত। কিন্তু, পিডিবি-র তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তের কারণে কোম্পানিগুলো সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে, গত ১৪ নভেম্বর আইনটির দুটি বিধান বাতিল করেন হাইকোর্ট। ওই বিধান দুটির মধ্যে ৬(২) ধারায় বলা হয়েছিল, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কোনো টেন্ডার আহ্বান না করে— সরাসরি দর কষাকষির মাধ্যমে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করতে পারবেন। অন্য একটি বিধানে এই চুক্তির বিষয়ে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) হাইকোর্টের রায় আমলে না নিয়ে ৩১ কোম্পানিকে গত ১৮ নভেম্বর নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে, কোম্পানিগুলোর থেকে সরকার বিদ্যুৎ কিনবে না। যদিও অর্ধেক সংখ্যক কোম্পানি ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণসহ দরকারি অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়েছে, আর বাকিরা জমি কেনাও চূড়ান্ত করে ফেলেছে।
গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে, এসব প্রকল্পের অতীত কর্মকাণ্ড ক্ষমা করে পর্যালোচনার সুযোগ রাখা হয়। এরপরেও গত ৫ ডিসেম্বর কয়েকটি প্রকল্পের জন্য নতুন দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় গেছে পিডিবি।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়কে উল্লেখ করে কোম্পানিগুলো এখন পিডিবির এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বলছে, পর্যালোচনা ছাড়াই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সংস্থাটি।
পিডিবির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে এরমধ্যেই ৩১টির মধ্যে ১৫টি কোম্পানি হাইকোর্টে পৃথক রিট আবেদন করেছে।
এসব প্রকল্পের মোট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হলো ৩ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট, যা ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগ বিনিয়োগ দ্বারা সমর্থিত।
রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী ও কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আহসানুল করিম টিবিএসকে বলেন, হাইকোর্ট তার রায়ে এ বিষয়ে স্পষ্ট বলেছেন, 'কোনো কোম্পানির প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সেটি, তাহলে সরকার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। এই অনিয়ম চিহ্নিত করতে পিডিবিকে একটি কমিটি করতে হবে। যেই কমিটি পর্যালোচনা করে অনিয়ম খুঁজে বের করবে। কিন্তু, এই প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে— পিডিবি সকল কোম্পানির সাথে চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে।'
পিডিবির সিদ্ধান্ত এবং হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়
৩১ কোম্পানিকে দেওয়া চিঠিতে পিডিবি জানিয়েছে, ২০১০ সালের আইনটির দুটি বিধান বাতিল হওয়ায় এই কোম্পানিগুলো থেকে সরকার বিদ্যুৎ ক্রয় করবে না, প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন, যেখানে বলা হয় যে চুক্তি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কিত আইনি জটিলতা এড়াতে, আদালত এই আইনের অধীনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সৎ বিশ্বাসে নেওয়া সমস্ত পদক্ষেপকে অস্থায়ীভাবে ক্ষমা করে দিচ্ছে। তবে আদালত এসব পদক্ষেপ, চুক্তির শর্তাবলী এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলিকে ভবিষ্যতে পর্যালোচনা করার অধিকার সংরক্ষণ করে।
এতে আরও বলা হয়, আইনের ৬ (২) ধারার অধীনে শুরু করা প্রক্রিয়াসহ চুক্তির অধীনে সংঘটিত কোনও অনিয়মের ক্ষেত্রে অস্থায়ী এই ক্ষমা প্রযোজ্য হবে না।
তবে গত ৫ ডিসেম্বর দেশের ৯টি স্থানে ১০টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে পিডিবি, দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হলো ২০২৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ৩১টি কোম্পানির সাথে আগের চুক্তিগুলো পর্যালোচনা ছাড়াই এসব দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সরকার যা বলছে
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গত ২০ জানুয়ারি ফোনে টিবিএসকে বলেন, 'আমরা আদালতের রায় লঙ্ঘন করিনি। রায় অনুযায়ী, যেসব কোম্পানির সাথে সরকার চুক্তি করেছে, সেগুলো বহাল রাখা হয়েছে। আর চুক্তির অনিয়মের বিষয় তদন্ত করতে জাতীয় কমিটি কাজ করছে। ৩১টি সোলার পাওয়ার প্লান্টকে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) দেয়া হয়েছিল, এগুলো চূড়ান্ত চুক্তি নয়।'
কোম্পানিগুলোর জমি কেনা ও প্রকল্প কর্মকাণ্ডের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'যেহেতু ৩১টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাথে কোনো চুক্তি চূড়ান্তভাবে হয়নি, তাই এবিষয়ে বর্তমান সরকারের কিছু করার নেই। তবে নতুন টেন্ডার দেয়া হয়েছে, সেখানে তারা অংশ নিতে পারবে।'
উপদেষ্টার এমন বক্তব্য সঠিক নয় বলে উল্লেখ করে আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, "হাইকোর্ট তার রায়ে এ বিষয়ে স্পষ্ট বলেছেন, আইনের ৬ (২) ধারার অধীনে শুরু করা প্রক্রিয়াসহ' - অর্থাৎ যেসব প্রকল্প এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে সেগুলোকেও আদালত ক্ষমা করেছেন।"
তিনি বলেন, 'এই কোম্পানিগুলো এলওআই পাওয়ার পর সরকারে নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় সকল কাজ সম্পন্ন করেছে। তাই সবগুলোই প্রক্রিয়াধীন। এই অবস্থায়, চলমান প্রকল্পকে বাদ দিয়ে নতুন প্রকল্পের জন্য সরকারের আহ্বান করা দরপত্র আইনসম্মত নয়। বা নতুন আইন দিয়ে প্রক্রিয়াধীন চুক্তি বাতিল সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।'
গত ১৮ নভেম্বরে নবায়নযোগ্য জ্বালানির এই ৩১টি কোম্পানিকে পৃথকভাবে চিঠি দেয় পিডিবি।
প্রকল্পগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ
পিডিবি এবং বিনিয়োগকারীদের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, এসব নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রকল্পগুলোর ৯০ শতাংশ, যার আনুমানিক মোট সক্ষমতা ৩ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থায়নে করা হচ্ছে।
তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরে ১৫টির বেশি প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকরা দরকারি জমির অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন। লেটার অব ইনটেন্ট পাওয়া ৩১ প্রকল্পের মধ্যে ২ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট হলো সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র, ৩২০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ এবং ২৫ মেগাওয়াট হলো বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প।
কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা এসব প্রকল্পের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশি ঋণদাতাদের কাছ থেকে নিয়ে প্রায় ৩০ কোটি ডলার ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ করেছেন।
প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্য চীন, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পাইপলাইনে আছে।
আন্তর্জাতিক সোলার কোম্পানি ইনফ্রাকো এশিয়ার উপদেষ্টা সাকির আহমেদ টিবিএসকে বলেন, অন্যান্যদের মতো আমাদের কোম্পানিও অনেক বছর ধরে এসব প্রকল্পের জন্য অর্থ, সম্পদ ব্যয় করে জমি অধিহগ্রহণ করলেও— এখন আমাদের নতুন দরপত্রে অংশ নিতে বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রায় ৩০টি কোম্পানি আছে যাদের এলওআই বাতিল করা হয়েছে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও জড়িত। 'কিন্তু, সরকারের জারি করা এলওআই কীভাবে বাতিল করা সম্ভব?' — তাদেরকে সেবিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।
সরকারের সিদ্ধান্তে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ক্ষুদ্ধ হয়েছেন এবং বিগত সরকারের অনিয়মের সাথে অন্যায্যভাবে তাদেরকে জড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা আশা করেছিলাম, সব প্রকল্প পর্যালোচনা করে— বাজে চুক্তিগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ন্যায় করা হবে।'
অর্থনীতিবিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রকল্পের বিদেশি বিনিয়োগ যদি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে বা প্রত্যাহার হয়, তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকে তা ব্যাহত করতে পারে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম টিবিএসকে বলেন, এসব কোম্পানির সাথে পুনরায় আলোচনা করার সুযোগ আছে সরকারের। চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে যদি কেউ অনিয়ম করে থাকে— তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তবে একতরফাভাবে সবগুলোকে বাতিল করে দেয়াটা সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নয়।'
প্রকল্পগুলোর সাইনিং
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এসব নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বেশিরভাগ প্রকল্পের স্পন্সর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লেটার অব ইনটেন্ট পায়। তাঁরা পিডিবির সাথে পিপিএ এবং সরকারের সাথে প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি সইয়ের অপেক্ষায় ছিল।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), পেট্রোলিয়াম পণ্য ও কয়লার মতো জিবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। সেটি কমিয়ে ভবিষ্যতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে বিশ্ববাজারে এসব জ্বালানির দাম বাড়তে থাকলে এবং দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট দেখা দিলে— কয়েক বছর আগে এসে এসব প্রকল্পের প্রাথমিক কাজে গতি আসে'- যোগ করেন তিনি।
সমাধানের উপায়
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'হাইকোর্টের যে বিধানটা আসছে— সেটি পূর্ণাঙ্গভাবে বিচেনায় নিলে সামধানটা আরেকটু শান্তিপূর্ণভাবে করা যেত। রায়ের শেষ দিকে বলা আছে যে, প্রয়োজনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এই চুক্তিগুলো রি-নিগোশিয়েট করতে পারবে। সেদিকে না গিয়ে পুরোটাই একতরফাভাবে সবগুলোকে বাতিল করে দেয়াটা, আমার কাছে মনে হয়েছে— এটি সুবিবেচনাপ্রসূত নয়।'
তিনি বলেন, 'তবে এটা ঠিক যে এলওআইগুলোর ব্যাপারে কিছুক্ষেত্রে সমস্যা ছিল, ত্রুটি ছিল এবং কিছু কিছু বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। যেগুলোর বিষয়ে প্রশ্ন আছে, সেগুলো হয় রি-নিগোশিয়েট বা আলোচনা করে বাতিলের দিকে গেলে ভালো হত।
'এলওআই পাওয়া কোম্পানিগুলোর সাথে বিদ্যুতের যে দর ঠিক করা হয়েছে, এখন তা নিয়ে পুনরায় আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। এই কোম্পানিগুলোর সাথে ক্যাপাসিটি চার্জ ও পেমেন্ট বিষয়ে যে শর্তগুলো ছিল— সেগুলোও রি-নিগোশিয়েট করা যাবে'- তিনি আরও বলেন।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'যারা এই অনুমোদনগুলো পেয়েছিলেন, তাদের অনেকের সাথে আগের সরকারের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তাদের অনেকের ব্যবসায়ীক অভিজ্ঞতাও নেই। কিন্তু, রাজনৈতিক পরিচয়ের সুবাদে অনেকেই বিভিন্ন কোম্পানির বোর্ডে সদস্য হয়েছেন। যেসব কোম্পানির বোর্ডে রাজনৈতিক বিবেচেনায় পরিচালক রয়েছে, সেগুলোর বোর্ড পুনর্গঠনের বিষয়ে সরকার পরামর্শ দিতে পারে। এসব কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য তিন মাস সময় দিতে পারে সরকার। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তাদের সাবমিশন দিলে— সরকার সেগুলো বিবেচনায় নিতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।'
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, "সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেজন্য এই কোম্পানিগুলোকে সরকার বিশেষ বিবেচনায় 'রিভার্স অকশন মেথড' অনুসরণ করে উন্মুক্ত দরপত্রের প্রক্রিয়ায় নিতে পারে। এভাবে তাদেরকে ওপেন টেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। তবে এলওআই পাওয়ার পরও যেসব কোম্পানি কার্যক্রম শুরুই করেনি— তাদেরটা বাতিল করতে পারে সরকার।"