ভারতে পাচারকালে ৩০ কেজি ইলিশসহ আটক ২
যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৩০ কেজি ইলিশ মাছসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হল, আরফিন (১৯) ও বিল্লাল হোসেন (২২)।রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুটখালি সীমান্ত থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটক আরফিন পুটখালী গ্রামের আনার আলীর ছেলে ও বিল্লাল একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
বেনাপোল পোর্ট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রবিউল ইসলাম জানান, ইলিশ মাছ ভারতে পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুটখালী বাজারের পাশে অভিযান চালায় পুলিশ। থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এইচ এম আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে ৩০ কেজি ইলিশ মাছসহ দুই চোরাকারবারীকে আটক করে দলটি।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের যশোর আদালতে পাঠানো হয় বলে জানান এএসআই রবিউল ইসলাম।
বাংলাদেশে ইলিশের বর্তমান অবস্থা
২০১২ সালের ১ অগাস্ট থেকে ইলিশসহ সব মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ইলিশ ছাড়া অন্য সব মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
পরে দেখা গেল, সরকার ইলিশ মাছ রপ্তানি বন্ধ রাখলেও অবৈধভাবে তা পাচার হচ্ছে। এতে একটা বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় সরকার।তাই পাচার বন্ধ করতে ইলিশ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে গত বছর জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
এই উদ্দেশ্যে নেওয়া হয় বেশ কিছু প্রজেক্ট। উপকূলের নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশের আট জেলায় ‘ইকো ফিশ’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো ইলিশের বংশবিস্তার ও প্রজননকাল নির্ধারণসহ নানা দিক নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের মার্চে শুরু এই প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর।
এর ফলও পরিলক্ষিত হচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৩ দশমিক ৯৫ লাখ টন। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ টন। আর বাংলাদেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদিত হয় প্রায় ৪ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়, তার ১১ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান ১ শতাংশের মতো।
এর আগে ২০১৭ সালে মৎস্য অধিদফতরের আবেদনে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর ইলিশকে বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ইলিশের ব্র্যান্ডিং ও শনাক্তকরণ সহজ হচ্ছে।