‘সংস্কার অযোগ্য’ ইউএসএআইডি বন্ধের ব্যাপারে ‘একমত’ ট্রাম্প, বন্ধে কাজ চলছে: মাস্ক
এবার মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির অবস্থা 'সংস্কার অযোগ্য' বলে জানিয়ে ইলন মাস্ক বলেন, ইউএসএআইডি বন্ধের ব্যাপারে একমত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তারা সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কাজ করছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্ককে ফেডারেল ব্যয় সংকোচন প্যানেলের নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছেন। টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও মাস্ক সোমবার এক্স-এ তার নেতৃত্বাধীন এই ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডিওজিই) আপডেট নিয়ে আলোচনার সময় এসব তথ্য জানান।
ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির উদ্দেশ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যয় কমানো এবং সরকারের কার্যক্রমকে আরও কার্যকরী করা।
এক্সে ওই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিবেক রামাস্বামী এবং রিপাবলিকান সিনেটর জনি আর্নস্ট ও মাইক লি।
আলোচনার শুরুতেই মাস্ক বলেন, 'তারা ইউএসএআইডি বন্ধ করার কাজ করছেন। এর অবস্থা সংস্কারের অযোগ্য'।
মাস্ক আরও বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও একমত যে এটি বন্ধ করা উচিত।'
এর আগে শনিবার সংস্থাটির শীর্ষ দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো একদিন পর, স্থানীয় সময় রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, 'এটি (ইউএসএআইডি) একদল উগ্র উন্মাদ দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল এবং আমরা তাদের বের করে দিচ্ছি ... পরে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।'
এর মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে সোমবার সকালে ইলন মাস্ক জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। ট্রাম্প তার সঙ্গে 'একমত' যে ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভার্মেন্ট এফিসিয়েন্সি বিভাগের কর্মকর্তারা ইউএসএআইডির গোপনীয় তথ্যসহ এজেন্সির অন্যান্য সিস্টেমে তাদের অ্যাক্সেস চেয়েছিলেন। কিন্তু কর্মকর্তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে ছুটিতে পাঠানো হয়।
ইউএসএআইডি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক দাতা সংস্থা। ২০২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র নারীস্বাস্থ্য থেকে শুরু করে বিশুদ্ধ পানি, এইচআইভি/এইডস চিকিৎসা, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং দুর্নীতিবিরোধী কাজে বিশ্বব্যাপী ৭২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী মোট মানবিক সহায়তার ৪২ শতাংশ দিয়েছে দেশটি।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণার পর থেকে ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী এই সংস্থার প্রায় ১০ হাজার কর্মী রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প তার 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। থাই শরণার্থী শিবিরে ফিল্ড হাসপাতাল, যুদ্ধ অঞ্চলগুলোতে ল্যান্ডমাইন অপসারণ এবং এইচআইভির মতো রোগে আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য ওষুধ সরবরাহ- এসব কর্মসূচি এখন বন্ধ হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মার্কিন ব্যয় ও জালিয়াতি কমানোর বিষয়ে আরও বিষদভাবে জানানোর সময় মাস্ক অনুমান করে বলেন, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি ১ ট্রিলিয়ন ডলার কমাতে পারবে ট্রাম্প প্রশাসন।
উদাহরণস্বরূপ তিনি দাবি করেছেন, নিজেদেরকে বা ভুয়া ডিজিটাল মার্কিন নাগরিক হিসেবে উপস্থাপন করে 'পেশাদার বিদেশি জালিয়াতি চক্র' বিপুল অর্থ চুরি করছে।
তবে, মাস্ক তার জালিয়াতি করে অর্থ চুরির দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি বা ১ ট্রিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ কীভাবে নির্ধারণ করেছেন তা ব্যাখ্যা করেননি।