আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। খবর বিবিসি'র।
অন্যান্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দিনের সফরে মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত এক নৈশভোজেও যোগ দেবেন। তবে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
মোদি হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সাক্ষাৎ করা প্রথম বিদেশি নেতাদের মধ্যে একজন হবেন। বর্তমানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। আর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এ সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসবেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নরেন্দ্র মোদি ও তার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গত সপ্তাহে তারা একটি 'ফলপ্রসূ' ফোনালাপ করেছেন। সেখানে অবৈধ অভিবাসন, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক বাণিজ্য ও অভিবাসন নিয়ে বিদ্যমান উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে কতটা সহায়ক হবে, তা দেখার বিষয়।
গত বছর ট্রাম্প মোদিকে 'অসাধারণ নেতা' বলে প্রশংসা করেছিলেন। তবে একই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের অভিযোগও তুলেছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় ঠিক সে সময়, যখন প্রায় ১০০ ভারতীয় নাগরিককে বহনকারী একটি মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজ পাঞ্জাবে অবতরণ করে।
জানা গেছে, ফ্লাইটে থাকা সবাই যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন বা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও থেকে গিয়েছিলেন।
গত সপ্তাহের ফোনালাপে ট্রাম্প বলেন, অবৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে তিনি নিশ্চিত যে ভারত 'যথাযথ পদক্ষেপ' নেবে।
তিনি অনথিভুক্ত বিদেশিদের গণনির্বাসনকে তার প্রশাসনের অন্যতম প্রধান নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এর আগে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৭ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী ছিলেন।
এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি কার্যকর হয়নি। তবে অতীতে ট্রাম্প ভারতকে 'শুল্করাজ' এবং 'বাণিজ্য সম্পর্কের বড় অপব্যবহারকারী' বলে অভিহিত করেছিলেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যদি নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর কর কমাতে ব্যর্থ হয়, তবে ওয়াশিংটনও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
ভারতের সাম্প্রতিক বাজেটে বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত হার্লে ডেভিডসনের মতো উচ্চমানের মোটরসাইকেল।
ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এটি প্রমাণ করে যে ভারত 'শুল্করাজ' নয়।
গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই দেশ তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে কাজ করছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ওয়াশিংটনে থাকা অবস্থায় তার মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কো রুবিওর সঙ্গে আলোচনা করেন।
নভেম্বরে ট্রাম্পের নির্বাচনী বিজয়ের পর জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগ অনুভব করছে না।