গাজীপুরে ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, অগ্নিসংযোগ
গাজীপুরে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ঘটেছে। এসময় পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মহানগরীর বাসন থানার একটি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৪ নং ওয়ার্ডের ম্যানাল ফ্যাশন লিমিটেড নামক কারখানায় ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজের ছোট ভাই (সাবেক আওয়ামী নেতা) তছলিম সিরাজ ও তার অনুগত ওয়ার্ড বিএনপির অর্ধশত নেতা-কর্মী ওই কারখানার পরিত্যক্ত মালামাল ঝুট আনতে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাবেক গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল হকের নেতৃত্বে ১৪ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি নাজমুল, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ারসহ অন্যরা তাদের বাধা দেয়।
এতে উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ফ্যাক্টরির সামনের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর ও পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ কর হয়, পাশের কয়েকটি দোকান ও বাড়িতে হামলার করা হয়।
এ বিষয়ে সাবেক গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল হক বলেন, 'আমি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। আমি এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। শুনেছি বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজের পক্ষে ১৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আতাউরের নেতৃত্বে অর্ধশত মানুষ ওই কারখানার ভিতরে ঢুকে ঝুট নেওয়ার সময় বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এসময় স্থানীয়রা এবং আগে থেকে ওই কারখানার ঝুট নিত যে যুবদলের নেতারা বিষয়টি জানতে পেরে বাধা দেয়।'
তিনি আরও বলেন, 'পরে উত্তেজিত জনতা কারখানার আশপাশে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।'
১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, 'কারখানা কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীকে মাল দেবেন বলে বেশ কিছুদিন ধরে কথা বলছেন। এর ভেতর বাসন থানা সভাপতি তানভীর সিরাজ তার লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক ঝুট নামানোর চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসী পাল্টা প্রতিরোধ করলে তারা হামলা চালায়। সংঘর্ষকালে তানভীর সিরাজের লোকজন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়।'
এ বিষয়ে জানার জন্য বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজের বক্তব্য নিতে একাধিকবার তার মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে গাজীপুর মহানগহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, 'ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ধরনের যে কোনো দখল-আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কাজের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে দলীয় নেতা-কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরেও কেউ যদি এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ বিষয়ে জিএমপি'র বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, 'কারখানার মালিক স্থানীয়দের ঝুটের মালামাল দিতে চান। কিন্তু বাসন থানা বিএনপির সভাপতি জোর করে মাল নিতে চান। এতে স্থানীয়রা ও বিএনপির-যুবদলের একটি অংশ তাদের বাধা দেন। উভয় পক্ষে উত্তেজনার পরে সেখানে পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'