পিজ্জা দোকানের কর্মীর মিথ্যার জেরে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় লকডাউন
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া অঙ্গরাজ্যে কয়দিন আগেই ৬ দিনের কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। তবে এক পিজ্জার দোকানের কর্মীর মিথ্যা তথ্যের জের ধরেই এ লকডাউন জারি করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে জানিয়েছেন রাজ্যটির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যপ্রধান স্টিভেন মার্শাল জানান, স্বল্প সময়ে অত্যন্ত সংক্রামক হতে পারে এমন পরিস্থিতি ধরে নিয়েই কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। পরবর্তীতে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লকডাউন শিথিল করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় ২৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
কীভাবে সংক্রমণ শুরু হয়?
রাজ্যটির একটি কোয়ারেন্টিন হোটেলে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন ওই ব্যক্তি। পাশাপাশি তিনি রাজধানী অ্যাডেলাইডের একটি পিজ্জার দোকানেও কাজ করেন। যুক্তরাজ্য ফেরত এক পর্যটকের মাধ্যমে তিনি আক্রান্ত হন। কন্টাক্ট ট্রেসিং এর সাথে জড়িত কর্মীদের তিনি জানিয়েছিলেন, পিজ্জার দোকানে তিনি শুধু পিজ্জা কিনতেই গিয়েছিলেন। একারণে পরবর্তীতে কন্টাক্ট ট্রেসিং এর মাধ্যমে তার দ্বারা আক্রান্তদের চিহ্নিত করার পর ধারণা করা হয়, অল্প সময়ের মধ্যেই অত্যন্ত সংক্রামক এমন কোনো ভাইরাস স্ট্রেন সংক্রমণের জন্য দায়ী। পরবর্তীতে জানা যায়, ওই ব্যক্তি বিভিন্ন শিফটে ওই দোকানে কাজ করতেন।
মার্শাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, 'ওই ব্যক্তি যদি কন্টাক্ট ট্রেসিং এর সময় মিথ্যার আশ্রয় না নিত, তবে ৬ দিনের কঠোর লকডাউন জারি করার প্রয়োজন হতো না।'
এ ঘটনার কারণে কন্টাক্ট ট্রেসিং দলকে ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সকলের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। 'আগামী ২৪-৩৬ ঘন্টার মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে দ্রুতগতিতে সকলকে চিহ্নিত করে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।'
কর্তৃপক্ষ কীভাবে জানতে পারে?
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ কমিশনার গ্রান্ট স্টিভেনস জানান, কন্টাক্ট ট্রেসিং দলের সদস্যরা ওই পিজ্জা দোকানের কর্মীর সাথে প্রাথমিক ভাবে কথা বলার পর কিছু অসঙ্গতি লক্ষ করেন। পরবর্তীতে তারা আবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, তিনি প্রকৃতপক্ষে কয়েকটি শিফটে দোকানটিতে কাজ করেন। তার মিথ্যা বলার কারণ স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন মার্শাল।
তবে কন্টাক্ট ট্রেসিং দলকে মিথ্যা তথ্য দেয়া কারণে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা। মার্শাল জানান, 'আমাদের বর্তমান আইনি প্রক্রিয়ায় এধরণের ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।'
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া কি বিপদ মুক্ত?
এখনো এ নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছেনা। পিজ্জার দোকানটিতে ওই ব্যক্তির এবং আক্রান্ত বাকিদের সংস্পর্শে আসা সকলের চিহ্নিত করার কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। রাজ্যটির প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিকোলা স্পারিয়ার রাজ্যটিতে পরবর্তী কয়েকদিন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে সতর্ক করেন। তবে চিহ্নিত আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশনের ব্যবস্থা করায় তাদের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি নেই।
সূত্র: রয়টার্স