লন্ডন থেকে ফিরেই হোটেলে কোয়ারেন্টিনে সিলেটের ৪২ যাত্রী
যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর সে দেশের রাজধানী লন্ডন থেকে আরও ৪৮ যাত্রী নিয়ে সিলেটে এসেছে বিমানের একটি ফ্লাইট। এদের মধ্যে ৪২ যাত্রীই সিলেটের।
যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের নিচ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকরের পর আজই (সোমবার) লন্ডন থেকে সিলেটে প্রথম ফ্লাইট এলো।
দুপুর ১টায় বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-২০২) ফ্লাইটে করে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে, যুক্তরাজ্য থেকে আসা সকল যাত্রী বিমানবন্দর থেকেই বাসায় চলে গেলেও এবার আর সে সুযোগ মিলেনি। আজ আসা যাত্রীদের কঠোর নজরদারির মধ্যে বিমানবন্দর থেকে সিলেটের দুটি হোটেলে নেওয়া হয়। নগরের দরগাহ গেট এলাকার হোটেল স্টার স্পেসিফিক ও হলি গেইটে ১৪ দিন কোয়রেন্টিনে থাকবেন তারা।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (কোভিড-১৯ ও মিডিয়া সেল) শামমা লাবিবা অর্ণব বলেন, ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নজরদারির মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের হোটেলে আনা হয়েছে। তাদের পরিবহনের জন্য আগে থেকেই দুটি বিআরটিসি বাস বিমানবন্দরে ছিল।
তিনি জানান, সকল যাত্রীকে নিজ খরচে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেকেরই করোনা নেগেটিভ সনদ রয়েছে। তবু বিমানবন্দরে নামার পর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এরপর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সিলেটের ৪২ জনকে নামিয়ে বাকি ৬ যাত্রীকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিমানটি ছেড়ে গেছে।
এদিকে, দেশে এসেও বাড়ি যাওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে ফেরার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। অনেকেই বিমানের টিকিট কিনেও শেষ মূহূর্তে তা বাতিল করেছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিলেট অফিসের ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার জানান, সোমবার যে ফ্লাইট সিলেটে এসে পৌঁছে, তাতে দুই শতাধিক যাত্রী টিকেট কেটেছিলেন। কিন্তু দেশে ফিরে নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে- এই ভয়ে বাকিরা টিকিট বাতিল করেছেন। দেশে এসেছেন ৪২ জন।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট আসে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে বিমানের তিনটি ফ্লাইট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে। এই তিনদিন আসা যাত্রীদের মধ্যে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪ ও ২০২ জন ছিলেন সিলেটের। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের প্রত্যককেই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বাড়ি চলে যেতে দেওয়া হয়েছিল।
সহকারী কমিশনার (কোভিড-১৯) শামমা লাবিবা অর্ণব আরও জানান, নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনার পর যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের কারণে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ নিয়ে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। দেশটির সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধেরও দাবি উঠেছে। তবে ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দেন।