সাকিবের রানে ফেরার দিনে তামিম-শান্তর ব্যাটিং দাপট
প্রথম অনুশীলন ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো বেহাল দশা ছিল। ৪০ ওভারে মাত্র ১৬১ রান তুলেছিল তামিম একাদশ। হাফ সেঞ্চুরি করে ম্যাচটি জিতিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় অনুশীলন ম্যাচে আর তেমন হয়নি, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং অনুশীলনটা এদিন ভালোই হলো।
সাকিব আল হাসান রানের দেখা পেয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফিরে খারাপ সময়ে পড়ে যাওয়া বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। সাকিবদের দলের নাঈম শেখও পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। দারুণ ইনিংস খেলেছেন তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস। সব মিলিয়ে বিকেএসপিতে দিনটি ব্যাটসম্যানদের হয়ে উঠেছিল।
প্রথম অনুশীলন ম্যাচে বোলারদের দাপট থাকলেও এ ম্যাচে ছড়ি ঘুরিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। রানে রানে শেষবারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন সাকিব-তামিমরা। শনিবার বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জয় পেয়েছে তামিমের দল। আগে ব্যাটিং করে নাঈমের ৫০ ও সাকিবের ৫২ রানের সুবাদে ৪৫ ওভারে ৭ উইকেটে ২২৩ রান তোলে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। জবাবে তামিমের ৮০, শান্তর ৬১ ও লিটনের ৪৮ রানে ভর করে ৩৫.২ ওভারেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় তামিম একাদশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি সাকিবের রানে ফেরা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরা বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছিল না। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ৯ ম্যাচে করেছিলেন ১১০ রান, সর্বোচ্চ ছিল ২৮ রান। প্রথম অনুশীলন ম্যাচে ২৩ বলে ৯ রান করাটাও ছিল তার জন্য হতাশার। অবশেষে ব্যাট কথা বলেছে সাকিবের হয়ে। যদিও একটি চার ও একটি ছক্কায় ৫২ রান করতে সাকিবকে খেলতে হয়েছে ৮৩টি বল।
অবশ্য সাকিব হয়তো বলের দিকে তাকিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছেন না। কারণ দীর্ঘ সময় ক্রিকেট থেকে দূরে থাকায় ব্যাটে মরিচা পড়েছে, সেটা দূর করাতেই আপাতত নজর তার। সেদিক থেকে এই হাফ সেঞ্চুরিটা সাকিবকে নিশ্চয়ই সাহস যোগাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার লড়াইয়ে।
নাঈম শেখ ৬৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫০ রান করেন। এ ছাড়া ইয়াসির আলী ২৪, মুশফিকুর রহিম ২৫, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৩১, মেহেদী হাসান মিরাজ ১১, তাইজুল ইসলাম ৪ ও হাসান মাহমুদ ২ রান করেন। তামিম একাদশের মাহেদী হাসান ৯ ওভারে ৩১ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২ উইকেট নিলেও বেশ খরুচে ছিলেন, ৯ ওভারে ৬২ রান দেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন ও নাসুম আহমেদ। আফিফ হোসেন উইকেট পাননি।
২২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দাপুটে শুরু করেন লিটন ও তামিম। উদ্বোধনী জুটিতে ৭৭ রান যোগ করেন তারা। লিটন ৫৩ বলে ৯টি চারে ৪৮ রান করে আউট হন। তামিম সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু অন্যদের ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিতে স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। এরআগে ৮০ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮০ রান করেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
নাজমুল হোসেন শান্ত সবচেয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫১ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬১ রান করেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ মিঠুন ১৭ ও সৌম্য সরকার ১২ রানে অপরাজিত থাকেন। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও উইকেটশূন্য থেকেছেন সাকিব। একটি করে উইকেট নেন চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। উইকেট পাননি আল আমিন হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু জায়েদ রাহিরা।