ঢাকাকে বিধ্বস্ত করে সেরা দুই নিশ্চিত করলো তামিমের বরিশাল
টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে; খবরটি জেনেই আজ ফরচুন বরিশালের বিপেক্ষে মাঠে নেমেছিল ঢাকা ক্যাপিটালস। বাকি থাকা দুই ম্যাচে হারানোর কিছু ছিল না আসরজুড়ে হারের বৃত্তে বন্দী থেকে যাওয়া দলটির। এমন ম্যাচে চাপ কম থাকে, নির্ভার হয়ে খেলার সুযোগ মেলে। কিন্তু ঢাকার বেলায় দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ব্যাট হাতে নেমে উল্টো পথে হেঁটে গেলেন তাদের ব্যাটসম্যানরা, সংগ্রহ হলো সামান্য। যা পাড়ি দিতে কোনো বেগই পেতে হলো না ফরচুন বরিশালকে।
বুধবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বরিশালের বিপক্ষে ৯ উইকেরে বড় ব্যবধানে হেরেছে ঢাকা। এর আগেই চিটাগং কিংসের জয়ে তাদের প্লে-অফের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আজসহ পরের ম্যাচ জিতলেও ঢাকার পয়েন্ট হতো ১০। কিন্তু তিন ও চারে থাকা দুই দলের ঝুলিতে ইতোমধ্যে ১২ পয়েন্ট করে আছে। সেই বিবেচনায় আজকের ম্যাচে জয়-হার বিশেষ কিছু হতো ঢাকার জন্য। দুর্বার ছন্দে থাকা বরিশাল ১১ ম্যাচে ৯টিতে জিতলো, ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে তামিম ইকবালের দল। এই জয়ে সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত করলো বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা, নিশ্চিত হলো প্রথম কোয়ালিফায়ারও।
বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা ঢাকা পুরো ইনিংসজুড়ে ধুঁকেছে। মোহাম্মদ নবি, তানভীর ইসলাম, ফাহিম আশরাফদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দলটির কোনো ব্যাটসম্যান লড়াই করতে পারেননি। মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের রান করেন, কেউ ২০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। ১৫.৩ ওভারে ৭৩ রানে অলআউট হয় ঢাকা, যা এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।
জবাবে তাওহিদ হৃদয়ের দ্রুত বিদায়ের পর অধিনায়ক তামিম ও ডেভিড মালানের ব্যাটে ৬.৩ ওভারেই জিতে যায় ফরচুন বরিশাল। ৮১ বল হাতে রেখে জেতে তারা। সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জেতার দিক থেকে বিপিএলে এটা রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ঢাকা ডায়নাইমাইটেসর, ২০১৭ বিপিএলে ৭৩ বল হাতে রেখে সিলেট সিক্সার্সকে হারিয়েছিল তারা।
লক্ষ্য তাড়ায় দাপুটে শুরুই করে বরিশাল। যদিও তাদের উদ্বোধনী জুটিটা জমেনি। ৯ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রান করে আউট হন হৃদয়। তার বিদায়ে কোনো চাপই বুঝতে হয়নি দলকে। তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়ে ঝড় তোলেন নিয়মিত সুযোগ পাওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান করা মালান। দ্বিতীয় উইকেটে ২৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জেতান তামিম-মালান। তামিম ১৪ বলে ৪টি চারে ২১ ও মালান ১৬ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। বরিশালের যাওয়া একমাত্র উইকেটটি নেন ঢাকার বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ঢাকা ক্যাপিটালস। দলীয় ১৩ রানে ফিরে যান ওপেনার লিটন কুমার দাস। এখান থেকে যে ভাঙনের সুর বেজে ওঠে, তা আর থামেনি। নিয়মিত ধারায় উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় দলটি। ১১ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রান করেন অধিনায়ক থিসারা পেরেরা, যা ঢাকার ইনিংসের সর্বোচ্চ। লিটন ও রন্সফোর্ট বিটন ১০ রান করেন। আর কেউ দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। ৪ ওভারে ৯ রানে ৩টি উইকেট নেন নবি। তানভীর আরও বিধ্বংসী ছিলেন, ২ ওভারে ২ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ফাহিমের শিকারও ৩ উইকেট, ২.৩ ওভারে ১৫ রান খরচা করেন তিনি। জেমস ফুলার ৩ ওভারে ১৮ রানে একটি উইকেট পান।