মিয়ানমার অভ্যুত্থান: গুলিবিদ্ধ নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন
সেনা অভ্যুত্থানের বিপক্ষে রাজধানীতে বিক্ষোভকালে গতকাল পুলিশের গুলিতে আহত নারী বিক্ষোভকারীর অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে বিবিসি ।
মঙ্গলবারের সে বিক্ষোভে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, রাবার বুলেট এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে।
মানবাধিকার সংস্থা এবং সংবাদসংস্থাগুলোর মতে, হামলায় বিক্ষোভকারীর মাথায় গুলি লাগে।
পুলিশ শক্তি প্রয়োগের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে গুরুতর আহতের সংবাদ আসলেও এখন পর্যন্ত হতাহতের ঘটনা শোনা যায়নি।
সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণজমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং রাত্রিকালীন কারফিউয়ের নির্দেশ বহাল থাকার পরেও আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন এসে বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছেন।
টানা পঞ্চম দিনের মত বিক্ষোভ চলছে রাজধানী নাইপিদোতে; আজ ভোরে সরকারি চাকুরিজীবীদেরর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এ বিক্ষোভে সমবেত হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়লেও বিক্ষোভকারীদের তাতে সরানো যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাইপিদোর হাসপাতালের একজন মেডিক্যাল কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি বার্মিজ বিভাগ জানায়, মঙ্গলবার বিক্ষোভের সময় একজন নারী মাথায় এবং আরও একজন ব্যক্তি বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, আহত ওই মহিলার "মাথায় একটি প্রজেকটাইল ঢুকে ছিল।'
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত নারীর ফুটেজ ও ফটো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে।
জাতিসংঘ মঙ্গলবারে এ সহিংস বিক্ষোভে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও মানবিক সমন্বয়কারী ওলা এলমগ্রেন বলেছেন, " বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় শক্তির ব্যবহার অগ্রহণযোগ্য"।
উল্লেখ্য, এর আগে দেশটির কয়েক দশক দীর্ঘ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালে সংঘটিত বিক্ষোভ-সমাবেশে বিক্ষোভকারীদের হত্যার ঘটনা ঘটেছিল।
সু চি'র দলীয় কার্যালয়ে অভিযান
মঙ্গলবার রাতে অং সান সুচি'র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি'র (এনএলডি) সদর দপ্তরে "তল্লাশি ও তছনছ" করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এনএলডি এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনী দরজা ভেঙে দপ্তরটিতে প্রবেশ করে বলে জানায় বিবিসি'র মিয়ানমার শাখা। তবে সেসময় দলটির কোন নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
স্থানীয় সময় রাত আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত এ অভিযান চলে; সারাদেশে তখন কারফিউ জারি ছিল।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন দলের অন্য নেতাদের গৃহবন্দী করে সেনাবাহিনী দেশটির শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করে। তারা এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের নেতা জেনারেল অং হ্লেইং খুব দ্রুতই নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
- সূত্র: বিবিসি