সেঞ্চুরিতে দ্রুততম মিরাজ
চট্টগ্রাম টেস্টেই মাইলফলকে পৌঁছাতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। খুব কাছেই ছিলেন, দরকার ছিল ২ উইকেট। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে ৮ উইকেট নেওয়া মিরাজ কাঙ্ক্ষিত ২ উইকেটের দেখা পাননি। মিরপুর টেস্টে অপেক্ষা ফুরালো ডানহাতি এই অফ স্পিনারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে শেন মোজলেকে ফিরিয়ে টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক পূর্ণ করলেন মিরাজ। যা বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে দ্রুততম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান ম্যাচটি মিরাজের ২৪তম টেস্ট। ১০০ উইকেটের মাইলফলকে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে এটাই দ্রুততম। ২৫ টেস্টে ১০০ উইকেট নিয়ে দ্রুততম ছিলেন তাইজুল ইসলাম। এরপর আছেন সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ রফিক। সাকিব ২৮তম ম্যাচে এবং রফিক ৩৩তম ম্যাচে ১০০ টেস্ট উইকেট পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে ১০০ টেস্ট উইকেট শিকার করলেন মিরাজ। এই তালিকারও বাকি তিনজন সাকিব, তাইজুল ও রফিক।
আরও একটি রেকর্ডে নাম উঠেছে মিরাজের। বাংলাদেশের কনিষ্ঠতম বোলার হিসেবে ১০০ টেস্ট উইকেটের মালিক হলেন তিনি। ২৩ বছর ১০৯ দিন বয়সে মিরাজের ঝুলিতে জমা হলো ১০০ উইকেট। ২৫ বছর ২৪২ দিনে সাকিব ও ২৭ বছর ২১০ দিনে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন তাইজুল। বিশ্বের চতুর্থ কনিষ্ঠতম বোলার হিসেবে এই রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন মিরাজ। এই রেকর্ডে তার সামনে আছেন ড্যানিয়েল ভেটোরি, হরভজন সিং ও সাকলাইন মুশতাক। ২১ বছর ৪৬ দিন বয়সে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করা ভেটোরির দখলেই আছে রেকর্ডটি।
১০০ টেস্ট উইকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম হয়ে ল্যান্স গিবস, জেসন গিলেস্পি, পিটার পোলকদের মতো কিংবদন্তির পাশে নাম বসিয়েছেন মিরাজ। তারা সবাই ক্যারিয়ারের ২৪তম টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এই তালিকায় আছেন ভারতের অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও। বাঁহাতি এই স্পিনারও ২৪তম টেস্টে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তালিকায় আছেন ইংল্যান্ডের টনি লক, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাক্স ওয়াকার, রায়ান হ্যারিসরাও।
২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকে স্পিন জাদুকর হয়ে উঠেছিলেন মিরাজ। হাত ঘোরালেই মিলছিল উইকেটের দেখা। দুই টেস্টের ওই সিরিজে ৫টি, ৬টি করে উইকেট নেওয়া ডাল-ভাত বানিয়ে ফেলেছিলেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। ওই সিরিজে ১৯ উইকেট নিয়ে স্পিন বিভাগের অপরিহার্য অংশ যান বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার।
এরপর থেকেই বাংলাদেশের স্পিন বিভাগ সামলানোর কাজটি করে আসছেন মিরাজ। চলমান ম্যাচসহ ২৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে তরুণ এই অলরাউন্ডার ৫ উইকেট নিয়েছেন সাতবার, ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন দুইবার। তার ইনিংস সেরা বোলিং এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। ২০১৮ সালে ঘরের মিরপুরে ৫৮ রান খরচায় ৭টি উইকেট নেন মিরাজ। তার স্পিন ভেল্কির ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ১৮৪ রানে হারায় বাংলাদেশ।
আরও একটি বড় রেকর্ডে নাম উঠতে পারতো মিরাজের। এক ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তিতে টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ অলরাউন্ডার হিসেবে তার নাম বসতে পারতো ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, সাকিব আল হাসানদের পাশে। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর বল হাতে চার উইকেট নেন মিরাজ। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর তিন উইকেট (মোট ৭ উইকেট) নিয়ে সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তিনি। কিন্তু ১০ উইকেট পূর্ণ করা হয়নি, নিজের নামটি বসানো হয়নি কিংবদন্তিদের পাশে।