মহামারিতেও ঋণ ফেরত দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন কৃষকেরা
গেল বছরের বন্যা ও চলমান করোনা পরস্থিতিরি মাঝেও ঋণের কিস্তি পরিশোধে কৃষকদের মাঝে অনীহা নেই। কোভিডের কারণে ২০২০ সাল জুড়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করার সুবিধা থাকলেও কৃষকরা বরং বেশি পরিমাণে পরিশোধ করেছেন।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি এই সাত মাসে গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষকরা আড়াই হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ পরিশোধ করেছেন, যার পরিমাণ ১৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত 'এগ্রিকালচারাল এন্ড নন-ফার্ম রুরাল ক্রেডিট' বিশ্লেষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যায় উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় গেল বছর কৃষকরা আমন মৌসুমের ধানের দাম ভালো পেয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে ঋণ পরিশোধেও।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, কৃষকের হাতে টাকা থাকায় তারা ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন।
এদিকে জুলাই-জানুয়ারি এই সাত মাসে কৃষি ঋণ বিতরণের পরিমাণও বেড়েছে। কোভিডের কারণে উৎপাদন ও সেবাখাত ব্যাহত হলেও কৃষিখাতের উৎপাদন পর্যায়ে তার প্রভাব কম থাকায় ঋণের চাহিদা কমেনি।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাধারণত ফসল কাটার সময়ে এবং এর আগ দিয়ে কৃষকের ঋণ চাহিদা থাকে। গেল বছরের অক্টোবর থেকে আমন মৌসুম চলছে, তারই প্রভাব পড়েছে সার্বিক ঋণ বিতরণে।
সাত মাসে ঋণ বিতরণ ও আদায় বাড়লেও জানুয়ারি মাসে গেল বছরের জানুয়ারির তুলনায় আদায় ও বিতরণ কমেছে।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমান মৌসুম শেষের দিকে থাকায় জানুয়ারিতে ঋণের চাহিদা কমে এসেছে। অন্যদিকে কৃষকের হাতেও নগদ টাকা কম তাই আদায়ও কমেছে।
আগামী এপ্রিল থেকে বোরো মৌসুম শুরু হবে। এই মৌসুমকে সামনে রেখে মার্চ থেকে হয়তো ঋণের চাহিদা বাড়বে বলে তার অভিমত।
চলতি অর্থবছরের জন্য ২৬ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গেল অর্থবছর থেকে ২০ শতাংশ বেশি।
তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষি ঋণ বিতরণে পিছিয়ে আছে ব্যাংকগুলো। অর্থবছরের সাত মাসে বিতরণ হয়েছে অর্ধেকেরও কম পরিমাণ ঋণ।