ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন সার্ভিস চালুর আলোচনা
ঢাকা ও শিলিগুড়ির মধ্যে প্রস্তাবিত যাত্রীবাহী ট্রেন সেবা চালু করার ব্যাপারে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতের নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে (এনএফআর)। সোমবার নিউ জলপাইগুড়িতে দুই পক্ষ যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে বৈঠক করেছে।
রোববার বাংলাদেশের পাকশী রেলওয়ে ডিভিশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রেলওয়ের আট সদস্য ভারতের নিউ জলপাইগুড়িতে এসে পৌঁছান। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে বলে জানা গেছে।
এনএফআর-এর পক্ষে এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্ডিয়ান রেলওয়ের কাটিহার ডিভিশনের ম্যানেজার আর কে ভার্মা। মূলত নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের এই কাটিহার জোনই ভারতের দিকে ট্রেন সার্ভিসটির তত্ত্বাবধান করবে।
গত ১৭ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ সরকার আরেকটি পুরনো রুট চালু করে। সেই রুট একসময় কুচবিহারের হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে বাংলাদেশের নীলফামারির চিলাহাটি স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করত। ৫০ বছর বন্ধ থাকার পর আবার দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি মিলিতভাবে এই পণ্যবাহী ট্রেন সার্ভিসটি উদ্বোধন করেন।
রাধিকাপুর-বিরল (উত্তর দিনাজপুর) ও সিংহবাদ-রোহানপুরের (মালদা) পর এ নিয়ে ভারতের উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের তৃতীয় একটি ট্রেনের রুট যুক্ত হলো।
মূলত তৃতীয় ট্রেন রুট সংযোজনের পরেই দুই দেশ থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর শিলিগুড়ি পর্যন্ত একটি যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস চালু করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যায়।
এনএফআর-এর এক সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনই এই যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন করা হতে পারে। দু পক্ষের মধ্যে টানা আলোচনাই এই সম্ভাবনারই জানান দিচ্ছে।
এনএফআর সূত্র আরও জানায়, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে হলদিবাড়ি স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। রোববারই ইউনিয়ন রেলওয়ে মন্ত্রী পীযূষ গয়াল একটি নতুন স্টেশন ভবন উদ্বোধন করেছেন, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একটি সার্কুলেটিং এরিয়া, রানিং রুম, সিগন্যালিং এবং ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম।
প্রসঙ্গত, হলদিবাড়িই এই রুটের শেষ স্টেশন।
ভারতের রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বৈঠকে বেশকিছু বিষয় উঠে এসেছে। নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত বিষয়, রুট অনুযায়ী কোথায় কোথায় স্টেশন হতে পারে, ভাড়া কেমন হবে ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়।
রেলওয়ের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। তাদের মতে, বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতি বছর শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা ভ্রমণ উপলক্ষে শিলিগুড়িতে আসেন। তাই এই ট্রেন সার্ভিস তাদের খুবই উপকার করবে।
শিলিগুড়ির সোশ্যাল রিসার্চার সৌমেন নাগ বলেন, 'আমাদের উত্তরবঙ্গের অনেকেরই আত্মীয়-স্বজন রয়েছে বাংলাদেশে। সেখানে যেতে হলে তাদের একমাত্র উপায় ছিল চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে বাস দিয়ে যাওয়া কিংবা কলকাতা থেকে ফ্লাইট ধরা। প্রস্তাবিত ট্রেন সার্ভিস চালু হলে আমাদের জন্যে বাংলাদেশে যাওয়া সহজ ও আরামদায়ক হবে।'
- সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ