জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন জরুরি
জনস্বাস্থ্য সু-রক্ষার বিবেচনাতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০০৩ সালে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) অনুমোদন করেছিল। এই সনদে এপর্যন্ত স্বাক্ষর করেছে ১৮২টি দেশ। বাংলাদেশ প্রথম কয়েকটি স্বাক্ষরকারী দেশের অন্যতম, কারণ এখানে এফসিটিসি'র অনেক আগেই ধূমপান বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরি, ডা. অরুপ রতন চৌধুরি এবং আরো কিছু চিকিৎসক।
সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন,২০০৫ প্রণীত হয়। কিন্তু, তবুও বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লাখ। অথবা বলা যায় প্রাপ্তবয়স্কদের ৩৫.৬% তামাক সেবন করেন। অর্থাৎ, প্রতি তিন জনের একজন কোনো না কোন প্রকার তামাকদ্রব্য সেবন করছেন। দেখা গেছে, ধূমপায়ীদের তুলনায় ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহারকারী বেশি। দেশে ধূমপায়ী হচ্ছে প্রায় ২ কোটি (যার মধ্যে প্রায় সবাই পুরুষ, মাত্র ০.৮% নারী ধূমপায়ী আছেন); অন্যদিকে জর্দা, সাদাপাতা ও গুলের ব্যবহারকারী ২ কোটি ২০ লক্ষ, এতে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যাই বেশি। এসব তথ্য ২০১৭ সালের গ্যাটস এর সার্ভে থেকে পাওয়া। তবে পুরুষের একটি অংশ ধূমপান এবং জর্দা-গুল সেবন উভয়টিই চালিয়ে যাচ্ছেন। এই তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগের এবং তামাকের এই উচ্চহারে ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক হুমকি।
২০০৫ সালের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নানা সীমাবদ্ধতা দেখা দেয় এবং সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান যারা তামাক নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, এই ত্রুটিগুলো তাদের কাছে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বাধা হিসেবে ধরা পড়ে। যেমন; একটি বড় সমস্যা ছিল আইনটি হয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র ধূমপান নিয়ন্ত্রণের বিষয়, অথচ তামাকজাত দ্রব্যের কথা বললে আরও যে অনেক দ্রব্য আছে, বিশেষ করে ধোঁয়াবিহীন তামাকের কথা (জর্দা, সাদাপাতা, গুল) সংজ্ঞাতেই ছিল না। আরও বেশ কিছু বাস্তবায়নের সমস্যার জন্যে আইন প্রণয়নের ৮ বছর পর, ২০১৩ সালে প্রথম সংশোধনী আনা হয়।
বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে 'ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন,২০০৫, সংশোধিত ২০১৩' । বাংলাদেশে এখন সেই আইনের আওতায় তামাক নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ২০৪০ সালে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত ঘোষণা করা হবে, যার মাত্র ২০ বছর বাকি। এতো বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়া তামাকের ব্যবহার মহামারির মতোই ভয়াবহ। বিগত ১৫ বছরে আমরা কিছুদূর এগিয়েছি মাত্র, বিশ বছর সামনে রেখে আমাদের ভালো পরিকল্পনা করতে হবে। তামাক নেশা দ্রব্য; ব্যবহারকারীরা তাই সহজে ছাড়তে পারেন না। তামাক পাতার মধ্যে যে নিকোটিন আছে, সেটাই সব সর্বনাশের মূল। তাছাড়াও, মেশানো হয় আরও অনেক রকম ক্ষতিকর উপাদান। যারা তামাকের উৎপাদন ও ব্যবসা করছে, তারা নানাভাবে এই নেশাকেই পুঁজি করে তাদের মুনাফার পাহাড় গড়েছে। কাজেই ব্যবহারকারীর নেশা এবং তামাক ব্যবসায়ীর মুনাফার লোভ মিলে বাংলাদেশকে তামাকের বড় ঘাঁটিতে পরিণত করেছে।
তামাক সেবনের কারণে নানান রকম ব্যাধিতে (বিশেষ করে, মারাত্মক অ-সংক্রামক রোগ যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, ব্লাডপ্রেসারে স্ট্রোক করা, ইত্যাদি মরণঘাতি রোগে) প্রতি বছর আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। অকালে মৃত্যু বরণ করছে ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষ (২০১৮)। এসব পরিসংখ্যান হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। তামাকের ক্ষতির বিষয় কাউকে আর বিশেষ যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হয় না, প্রায় প্রতি বাড়িতেই পরিবারের সদস্যদের কেউ না কেউ তামাক সেবন করছেন এবং অসুস্থতায়ও ভুগছেন। তারা শারীরিক, আর্থিক, সামাজিক সব ধরনের কষ্টই করছেন। এক পর্যায়ে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু, সেটাও শরীরে রোগ বাসা বেধে ফেলার পর।
আইনের নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও; কিছু অর্জন তো অবশ্যই আছে। যেমন; ধূমপান যে খুব ভাল কোন কাজ- তা বুক ফুলিয়ে আর কেউ বলবেন না। ভদ্রতা ও সামাজিক আদব বজায় রাখতে গিয়ে ধূমপায়ী একটু দূরে গিয়ে সিগারেটে টান দেবে। রিক্সাওয়ালাকে যাত্রী বললে, সেও কষ্টের পয়সা দিয়ে কেনা সিগারেটটা ছুড়ে ফেলে দেবে। বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করবে না, নাটকে সিনেমায় কৌশলে দেখিয়ে সিগারেটের প্রচার করতে চাইলে, তাদের ছবির গায়ে তামাক মৃত্যুর কারণ লিখতে হবে। এসব দৃশ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায়, আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া যায়।
ব্যক্তি পর্যায়ে তামাকদ্রব্যের ব্যবহার কমানোর উদ্দেশ্যে আইন করাই একমাত্র উপায় নয়, বরং কয়েকটি উপায়ের মধ্যে একটি। ব্যবহারকারীকে বলা হচ্ছে না যে, তামাক সেবন বন্ধ করে দিন। আন্তর্জাতিক সনদেও তা লেখা নেই, থাকলে ভাল হতো। কিন্তু, তামাক সেবনের কারণে অন্যের ক্ষতি করা বে-আইনী কাজ অবশ্যই। এটা আইনীভাবে বলা যায় যে, এমন স্থানে আপনি সিগারেট বা বিড়ি সেবন করবেন না- যেখানে সিগারেটের ধোঁয়ায় অন্য অ-ধূমপায়ীরা আক্রান্ত হতে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে প্রতিবছর ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। নারীরা তো আরও বেশি আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ বাবা-চাচা, ভাই, সহকর্মী বা স্বামীর ধূমপানের কারণে সন্তান এবং স্ত্রী বা নারী আত্মীয় ও বন্ধুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। আইন সেক্ষেত্রে সুরক্ষা দিচ্ছে, পাবলিক প্লেসে ধূমপান আইন নিষিদ্ধ করেছে। তাই ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে, রেস্তোরা, কর্মক্ষেত্রে, হাসপাতালে এবং গণপরিবহনে ধূমপান কমেছে ১০% থেকে ৩০%। কিন্তু, পাবলিক প্লেস তো অনেক আছে। আবার কোথাও পাবলিক প্লেসে একটি নির্দিষ্ট কক্ষ বা স্থান রাখা হয়েছে, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় Designated smoking area (DSA) যেখানে গিয়ে ধূমপায়ী তার নেশা মেটাতে পারে। দেখা গেছে, এতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার রোধ করা যাচ্ছে না। কাজেই আইনে এই সংশোধনীর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই ধরনের কোন স্থান রেখে দিলে পাবলিক প্লেস তামাকমুক্ত হবে না।
বর্তমান আইনে ব্যবহারকারী কমানোর পাশাপাশি বেশি প্রয়োজন; তামাক কোম্পানি ও তামাক ব্যবসায়ীদের বিক্রয় কৌশল নিয়ন্ত্রণ। যেমন; আইনে বিজ্ঞাপন বন্ধ করা হয়েছে, কিন্তু তাই বলে তামাক দ্রব্যের প্রচার এবং পরোক্ষ বিজ্ঞাপন বন্ধ করা যায়নি। কারণ, পণ্য প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থাও যে বিজ্ঞাপন বা প্রচার- তা বলা হয় নি। এই সব কাজ করে সিগারেট কোম্পানি। আইনের ছোট্ট ফাঁকের সুযোগ নিয়ে তারা ছোট দোকান, হোটেলের বিশেষ স্থান নিজ খরচে সাজিয়ে দিয়ে যায়। এতে বিক্রেতার সুবিধা হয় আর যারা তামাক ব্যাবসায়ী তাদেরও বিজ্ঞাপনের কাজ হয়ে যায়। দোকানগুলো লাল বা হলুদ রংয়ের হয়ে যায়, খালি কৌটার ছবি দিয়ে সাজানো হয়। ফলে বিজ্ঞাপন বন্ধ করলেও তামাকের প্রচার বন্ধ করা যায় না।
বড় বড় কোম্পানির "বাণিজ্যিক সামাজিক দায়বদ্ধতা" বা সিএসআর নামের কার্যক্রম গ্রহণ করার আইনীভাবেই নিয়ম আছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজ করে থাকে। কিন্তু, এখন প্রশ্ন উঠেছে তামাক কোম্পানি কি সিএসআর আইনীভাবে করতে পারে? তারা যে ব্যবসা করছে তার ফলাফল হচ্ছে; রোগ ব্যাধি এবং মৃত্যু। তাহলে, তাদের সিএসআরের অর্থ হচ্ছে জুতা মেরে গরু দান বা গরু মেরে জুতা দান। তামাক চাষ এলাকায় তামাক পাতা পোড়ানোর জন্যে গাছ কাটা হয় নির্বিচারে, তারপর সিএসআরের নামে সবুজ বনায়ন করা হয় দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগিয়ে। আবার, তামাক চাষে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয় বলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কম্পোস্ট বানানোর। তারা তরুণদের জন্যে কর্মসূচি নেয়, শিক্ষা কার্যক্রমও করে। অথচ, এই তরুণদেরই তারা টার্গেট করে নতুন ধূমপায়ী হিসেবে, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে। এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তামাক কোম্পানির একমাত্র সামাজিক দায়বদ্ধতা হতে পারে তামাক উৎপাদন ও ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া। আমরা জানি, তামাক পণ্য নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু, তামাক পণ্য মৃত্যু ঘটায়। একথা তামাক কোম্পানির চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না। তাই তারা তাদের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে এই সিএসআরের আশ্রয় নেয়। তারা দেখাতে চায়, তারা 'নৈতিকভাবেই' ব্যবসা করছে। তারা মন্ত্রীদের এনে উদ্বোধন করায়, সেই আয়োজনের ছবি তুলে দেখাতে পারে তারা কতোটা গ্রহণযোগ্য! এটা একইসাথে সেই কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপন হিসাবেও কাজ করে। তাই, আন্তর্জাতিকভাবেই সিএসআর নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এসেছে। অন্যান্য দেশেও তামাক কোম্পানির সিএসআর নিয়ে আংশিক বা নিয়ন্ত্রিত সিএসআরের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেমন; ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন।
ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য যেমন জর্দা, গুল, সাদাপাতার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্যে আইনে সব ধারা ঠিকমতো ব্যবহার করা যায় না, কারণ সেগুলো নির্দিষ্টভাবে ধূমপানের সাথে যুক্ত। তাছাড়া, এই পণ্যগুলোর ব্যবহার এতো বেশি সামাজিকভাবে ছড়িয়ে আছে যে, ব্যবহারকারীদের ওপর আইন খাটানো কঠিন হয়ে পড়ে। জর্দা ও সাদাপাতা পানের সাথে খাওয়া হয়। পান খাওয়া নিষিদ্ধ নয়, ফলে কে পানের সাথে জর্দা-সাদাপাতা খাচ্ছে- তা মুখে দেওয়ার আগে সরাসরি না দেখে- কেউ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। গুল অবশ্য সহজে ধরা পড়ে যায়। জর্দা ও সাদাপাতার ক্ষেত্রে উৎপাদন ও বিক্রির পর্যায়ে আইনের ব্যবহার করতে হলে সংশোধন আনা জরুরি।
যেমন; সিগারেট বিড়ির ক্ষেত্রে প্রস্তাব এসেছে খুচরা শলাকা বা সিঙ্গেল স্টিক বিক্রি বন্ধ করতে হবে, তেমনি জর্দা এবং বিশেষ করে সাদাপাতা খুচরা বিক্রির কারণে দামের দিক থেকে এবং প্রাপ্যতার দিক থেকে সহজ হয়ে গেছে। একেবারে দিনমজুর, নারী শ্রমিক, বাসাবাড়িতে যারা কাজ করেন- তারা দিনে কয়েকবার খিলিপান কিনে খান এবং স্বল্পমূল্যে খুচরা সাদাপাতা কিনতে পারেন। এই খুচরা বিক্রি বন্ধের জন্যে আইনে নতুন ধারা সংযুক্ত করা দরকার।
জর্দার বাজার দেখলে বোঝা যায়, কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে উৎপাদনকারীরা স্বল্প পুঁজিতে নিজ বাড়ীর একটি অংশে বা ছোট ফ্যাক্টরি দিয়ে বিভিন্ন সাইজের ও ওজনের জর্দার কৌটা তৈরি করে। উবিনীগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪৫ রকমের সাইজের কৌটা বাজারে পাওয়া গেছে, এর মধ্যে ৩ গ্রাম থেকে শুরু করে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত জর্দা থাকে। দামও তেমনি নানা রকম; ৫ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০-২০০ টাকায়ও পাওয়া যায়। বেশির ভাগ ২০-২৫ টাকায় পাওয়া যায়। বলাবাহুল্য গরিব মানুষ কম দামে এবং যতো ছোট সাইজের পাওয়া যায়- তাই কিনতে চেষ্টা করে। সে একদিকে নেশার জন্যে খায়, অন্যদিকে দুপুরের খাওয়ার সময় ক্ষুধা দমানোর জন্যে মুখে খাদ্য দেয়ার বদলে জর্দা দিয়ে পান পুরে দেয়। তাই আইনে সংযোজনের প্রস্তাব এসেছে যে ধোঁয়াবিহীন তামাক দ্রব্যের প্যাকেট, কৌটার আকার, আয়তন এবং এর মধ্যে কতটুকু জর্দা থাকবে- তা নির্ধারণ করে দেয়া। সহজভাবে বললে স্ট্যান্ডারর্ডাইজড প্যাকেজিংয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সিগারেটের ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। তাই বলে তামাক কোম্পানিগুলো থেমে নেই। তারা নিত্যনতুন তামাকপণ্য উদ্ভাবন করছে। এই ধরনের পণ্যকে বলা হয় ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট।বাংলাদেশে তরুণদের ইতিমধ্যে ই-সিগারেট "জনপ্রিয়(?)" হতে শুরু করেছে। নানাভাবে কোম্পানি কৌশলের কাছে তারা ধরা পড়ে যাচ্ছে। আমরা বিড়ি-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যস্ত থাকতে থাকতে, এই নতুন তামাক পণ্যে বাজার ছেয়ে যাবে। জানা গেছে, কোভিডের লকডাউনের সময় বাড়িতে হোম ডেলিভারি হয়েছে ই-সিগারেটের । ২০৪০ সালের মধ্যে সিগারেট-বিড়ি কমে গিয়ে; ই-সিগারেটসহ অন্যান্য তামাক পণ্যের ব্যবহার বেড়ে গেলে তো জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা হবে না। বরং নিকোটিন সেবন ঠিকই থাকলো।
তাই সব দিক বিবেচনা করে, বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন, সংযোজন করা অতি-জরুরি হয়ে পড়েছে। কাজটি করবেন জাতীয় সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যেই, বেশ কয়েকজন এমপি এবিষয়ে সরব ভূমিকা নিয়েছেন। অন্যান্যরাও এগিয়ে আসবেন বলে আশা করছি। দেশের মানুষের জন্যে, আগামীর সুস্থ ও সজীব প্রজন্মের জন্যে- আমাদের এই কাজটি করতেই হবে। বাংলাদশ সরকারকে আরও বিবেচনায় রাখতে হবে যে, ২০৩০ সালে এসডিজি লক্ষ্যগুলোর অর্জন ভালোভাবে দেখাতে হবে। তামাকের কারণে এসডিজি'র কয়েকটি লক্ষ্য; বিশেষ করে এসডিজি ১ এবং ৩ এর 'ক'-সহ অনেকগুলো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না। দ্রুত কাজ না করলে আর মাত্র ১০ বছরেরও কম সময়ে আমরা আবার পিছিয়ে পড়বো।
- লেখক: প্রাবন্ধিক ও মানবাধিকার কর্মী