হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখি কমেছে অর্ধেক
এক বছরের ব্যবধানে দেশের অন্যতম বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে পাখির সংখ্যা কমেছে অর্ধেক । ২০২০ সালের শুমারিতে হাওরে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি জলচর পাখির উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেলেও এ বছর ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারির শুমারিতে ৪৬ প্রজাতির ২৪ পাখির হাজার ৫৫১টি জলচর পাখির দেখা মিলেছে।
বন বিভাগের সহযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন (আইইউসিএন), প্রকৃতি ও জীবন এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব হাকালুকি হাওরের ৪৬টি বিলে এবারের শুমারিটি করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শুমারিতে অংশ নেওয়া আইইউসিএন-এর মুখ্য গবেষক সীমান্ত দিপু।
তিনি জানান, শুমারিতে ২৪ হাজার ৫৫১টি পাখির দেখা মিলেছে, তার মধ্যে ৬ হাজার ৪৭২টি বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহ সভাপতি তারেক অনু জানান, হাওয়াবন্যা, কালাপানি, রঞ্চি, দুধাই, গড়কুড়ি, চোকিয়া, উজান-তরুল, ফুট, হিংগাউজুড়ি, নাগাঁও, লরিবাঈ, তল্লার বিল, কাংলি, কুড়ি, চেনাউড়া, পিংলা, পরোটি, আগদের বিল, চেতলা, নামা-তরুল, নাগাঁও-ধুলিয়া, মাইছলা-ডাক, চন্দর, মালাম, ফুয়ালা, পলোভাঙা, হাওড় খাল, কইর-কণা, মোয়াইজুড়ি, জল্লা, কুকুরডুবি, বালিজুড়ি, বালিকুড়ি, মাইছলা, গড়শিকোণা, চোলা, পদ্মা, কাটুয়া, তেকোণা, মেদা, বায়া, গজুয়া, হারামডিঙা, গোয়ালজুড়সহ হাওরের ৪৩টি বিলে পাখিশুমারি চলে। যেভাবে পাখি কমেছে, তার পেছনে অনেক কারণ আছে। স্থানীয় মানুষকে সচেতন হয়ে পাখি শিকার বন্ধ এবং তাদের আবাসের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাখি কমে গেলে মাছও কমে যাবে। যে হাওরে পাখি থাকে না, প্রাকৃতিক নিয়মে সেখানে মাছও হবে না।
সীমান্ত দিপু জানান, সবচেয়ে বেশি ৮ হাজার ৩৮৯টি পাখির দেখা মিলেছে হাওর খাল বিলে। পাখি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে পরিবেশের ভারসাম্য না চিন্তা করে মাছ ধরা এবং হাওর শুকিয়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন তিনি।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালে হাকালুকি হাওরে পাখির সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২৮১। ২০১৮ সালে তা কমে এসে দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ১০০-তে। ২০১৯ সালে এর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৯৩১। ২০২০ সালের শুমারিতে হাওরে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি পাখির দেখা মেলে।
পাখি শুমারিতে অংশ নেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, বার্ড ক্লাবের সহ সভাপতি তারেক অণু, আইইউসিএনের মুখ্য গবেষক সীমান্ত দিপু এবং আইইউসিএন বাংলাদেশের অন্য গবেষকরা।