শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষা: রায় বাস্তবায়নের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় ১০ বছর আগে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে রিটকারী পক্ষে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, গণপূর্ত সচিব, সংস্কৃতি সচিবসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ আদেশ দেন। এছাড়া এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) দায়ের করা রিটে ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন আদালত।
নির্দেশনাগুলো হলো:
১.ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করা। ওই এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা নেয়া যেন ভবঘুরে ঘোরাফেরা করতে বা অসামাজিক কার্যকলাপ চলতে না পারে।
২. মূল বেদিতে কোনো মিটিং, সমাবেশ থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো, বেদির পাদদেশে মিটিং, সভা করতে নিষেধ থাকবে না।
৩. ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক দিতে হবে।
৪.যেসব ভাষাসৈনিক জীবিত আছেন তারা কেউ সরকারের কাছে কোনো আর্থিক সাহায্য চাইলে তা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
৫.বিশ্ববিদ্যালয় ও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
৬.শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলনের তথ্য সংক্রান্ত ব্রুসিয়ার রাখা যাতে পর্যটকরা তথ্যাবলি জানতে পারে।
৭.ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য বিবাদীদেরকে ১টি কমিটি গঠন করা এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
৮.ভাষাসৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমত সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করা।
শুনানিতে বাদী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায় দেওয়ার ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও বাস্তবায়নের জন্য একাধিকবার আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে, এমনকি কিছু নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলেও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা, ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি।
মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায় সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে বাদী পক্ষে ৪ মার্চ একটি আবেদন দাখিল করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।