কেনিয়ায় ব্রিটিশ সেনাদের সৃষ্ট দাবানলে মারা পড়েছে পাঁচটি হাতি
কেনিয়ায় ব্রিটিশ সৈন্যদের দ্বারা সৃষ্ট দাবানলের মাঝে পড়ে ৫টি হাতি ও হাতি শাবক মারা গেছে।
দেশটির ললডাইগা সামরিক প্রশিক্ষণ অঞ্চলের ৮০০০ একরের মধ্যে এই আগুন লাগে বলে জানা গেছে। প্রশিক্ষণরত সৈন্যরা ক্যাম্পের একটি স্টোভে রান্নার সময় সেখান থেকে শুকনো ঘাসে আগুন লেগে যাওয়ার পরেই এই দাবানলের সূত্রপাত।
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা গত রাতের এই দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনার জেরে ললডাইগা অঞ্চলে সকল ধরনের সেনা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হলেও জরুরি ভিত্তিতে আগুন নেভানোর জোর তৎপরতা এখনো অব্যহত রয়েছে।
শুকনো ঝোপঝাড় সমৃদ্ধ বিশাল এলাকাজুড়ে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ায় কয়েকশ' ব্রিটিশ সেনাকে আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে।
গতকাল রাতে ব্রিটিশ এবং কেনীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে শত শত টন পানি ঢালা হয় আগুন নেভাতে। এছাড়াও, আশেপাশের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করেছে যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর গাড়িগুলো।
বুধবার রাতে দাবানলের লেলিহান শিখার মাঝে পরে চারটি বড় হাতি মারা যায়। ব্রিটিশ সেনাদের যুদ্ধচর্চার ঘাঁটির ভেতরে যেন কিছু না ঢুকতে পারে সেজন্যে দেয়া বৈদ্যুতিক বেড়ার ভেতরে এই হাতিগুলো আটকে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিত করে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান জানান, সেনাদের খাবার তৈরির উদ্দেশ্যে জ্বালানো স্টোভের আগুন শুকনো ঘাসে লাগার ফলেই- তা খুব দ্রুত বিশাল এলাকায় ছড়িয়ে যায়।
তবে এ দুর্ঘটনায় কোন ব্রিটিশ সেনা আহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
কেনিয়ায় ব্রিটিশ প্রশিক্ষণ অঞ্চলের মধ্যেই ভিন্ন একটি আগুন লাগার ঘটনায় গত সপ্তাহেই একটি বাচ্চা হাতি মারা যায়।
এই ঘটনায় রয়্যাল মিলিটারি পুলিশ জানায়, তারা একপাল হাতিকে সরানোর জন্যে একটি আতশবাজি ছুঁড়েছিলেন। কিন্তু, তা ঝোপের মধ্যে গিয়ে পড়ে আগুন ধরে যাওয়ায় একটি বাচ্চা হাতি আটকে যায়।
এদিকে, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হাতি মারা যাওয়ার ঘটনায় কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি ব্রিটিশ সৈন্য কেনিয়ায় প্রশিক্ষণরত। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আগুন লাগা সম্পর্কে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনার জন্যে তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই দায়ী এবং বর্তমানে তারা জরুরি ভত্তিতে স্থানীয়দের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছেন। কেনিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে তারা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যে কাজ করছেন বলেও জানা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) এর 'রেড লিস্ট' অনুযায়ী আফ্রিকান হাতির দুটি প্রজাতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে- এই খবর গতকালই প্রথম প্রকাশ পাওয়ার পরই ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি আসে।
কেনিয়ায় ব্রিটিশ সেনাদের বেশিরভাগই মার্সিয়ান রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের। গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর প্রধান জানান, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারের সমন্বিত পর্যালোচনার ভিত্তিতে এখানের সৈন্য সংখ্যা কমানো হবে।
বর্তমানে সেনাবাহিনীর ২৩০ জন কর্মকর্তা ব্রিটিশ ও কেনীয় সেনাদের প্রশিক্ষণের কাজে স্থায়ীভাবে কেনিয়ায় বসবাস করছেন। এদের বেশিরভাগই ব্রিটিশ আর্মি ট্রেনিং ইউনিট কেনিয়া- এর অংশ।
- সূত্র: ডেইলি মেইল