রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে শুরু কোহলির দলের
আইপিএল মানেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জয়জয়কার। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি এই আসরে রেকর্ড ৫টি শিরোপা জিতেছে দলটি। সর্বশেষ দুই আসরেই তাদের মাথায় উঠেছে সেরার মুকুট। কিন্তু নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামলেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে দলটি। ১৩টি আসরের মধ্যে ৮ আসরেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে তারা।
এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। ২০২১ আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে হেরে গেছে মুম্বাই। রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় বিরাট কোহলির দল। বল হাতে ৫ উইকেট নেওয়া হার্শাল প্যাটেল ৩ বলে ৪ রান করেন। তার এই ৪ রানেই অসাধারণ এক জয় পায় বেঙ্গালুরু।
শুক্রবার চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে আসরের সফলতম দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। দলের হয়ে কেউ-ই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ক্রিস লিনের ৪৯ ও সূর্যকুমার যাদবের ৩১ রানের সুবাদে ৯ উইকেটে ১৫৯ রান তোলে রোহিত শর্মার দল। বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকা মুম্বাইকে মূলত থামিয়েছেন হার্শাল। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন ডানহাতি এই পেসার।
জবাবে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দলকে এগিয়ে দেওয়ার পরও বিপদে পড়ে বেঙ্গালুরু। পরের দিকটা সামলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। কিন্তু জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে রান আউট হয়ে ফেরেন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান। শেষ বলে ১ রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন ম্যাচ সেরা হার্শাল।
জয়ের লক্ষ্যে দাপুটে শুরুই করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ৪.২ ওভারে স্কোরকার্ডে ৩৬ রান যোগ করেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ১০ রান করে ওয়াশিংটন ফিরে গেলে চাপে পড়ে বেঙ্গালুরু। পরের ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের বলে উপড়ে যায় রজত পতিদারের স্টাম্প।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে অবশ্য এই চাপ কাটিয়ে তোলেন কোহলি। এই জুটিতে ৫২ রান পায় বেঙ্গালুরু। কিন্তু ২৯ বলে ৪টি চারে ৩৩ রান করে কোহলি বিদায় নিলে হঠাৎ-ই দিক হারায় দলটি। এক ওভার পরই আউট হন ম্যাক্সওয়েল। ২৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করে আউট হন অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটসম্যান।
এরপর এবি ডি ভিলিয়ার্স এক পাশ সামলে নিলেও অন্য প্রান্তে চলতে থাকে আসা যাওয়ার মিছিল। দ্রুতই ফিরে যান শাহবাজ আহমেদ, ড্যান ক্রিশ্চিয়ানরা। একাই দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন ভিলিয়ার্স। কিন্তু ২৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ রান করা ভিলিয়ার্স ১৫৮ রানের মাথায় আউট হলে হারের শঙ্কায় পড়ে যায় কোহলির দল। বল হাতে দাপট দেখানো হার্শাল জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন।
এরআগে ব্যাটিংয়ে নামা মুম্বাইয়ের শুরুটা খুব একটা ভালো ছিল না। দলীয় ২৪ রানের মাথায় ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফেরেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। যদিও দলকে এই চাপ বুঝতে দেননি ক্রিস লিন ও সূর্যকুমার যাদব। দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ রানরে জুটি গড়ে তোলেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
এই জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় মুম্বাই। লিন ৩৫ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৯ রান করেন। সূর্যকুমার ২৩ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ রান করেন। এরপর ঈষান কিষান ও হার্দিক পান্ডিয়া দাপুটে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যানকেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান হার্শাল।
কিষান ১৯ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২৮ রান করেন। হার্দিক করেন ১৩ রান। মুম্বাইয়ের শেষের ব্যাটসম্যানদেরও দাঁড়াতে দেননি হার্শাল। 'অখ্যাত' এই পেসার ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নেন। একটি করে উইকেট পান কাইল জেমিসন ও ওয়াশিংটন সুন্দর।