ভর্তি পরীক্ষার সময় পেছানোর কথা ভাবছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পরীক্ষা সময় পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে আগামী ৫ মে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার সময় নির্ধারণ সংক্রান্ত এক সভার আয়োজন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সদস্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, তারা ইতোমধ্যে ভর্তির আবেদনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন।
"কোভিড-১৯ মহামারির সেকেন্ড ওয়েভের সংক্রমণের ফলে আমাদের প্রস্তুতিতেও ব্যাঘাত ঘটেছে। আমাদের অবশ্যই গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করতে হবে। আগামী সভায় এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব আমরা," বলেন তিনি।
ইতোমধ্যেই ভর্তি পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২১ মে থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানো হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ৬ আগস্ট 'ক' ইউনিটের, ৭ আগস্ট 'খ' ইউনিটের, ১৩ আগস্ট 'গ' ইউনিটের, ১৪ আগস্ট 'ঘ' ইউনিটের ও ৩১ জুলাই 'চ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
৩ মে পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় বাড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
বুয়েটের সূত্রে জানা গেছে, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আগামী ৩১ মে ও ১ জুন প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ১০ জুনের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের বাছাই করা হবে।
বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইদের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
"কোভিড-১৯ পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হলে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না," বলেন তিনি।
দেশে মোট ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে। ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০টি সাধারণ, সাতটি কৃষি ও তিনটি প্রকৌশল-এই তিন ভাগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বাকি ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পৃথক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষার সময় যে কোনো ধরনের অনিয়ম এড়াতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসের বাইরে অন্য কোনো স্থানে পরীক্ষা নিতে পারবে না।
সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সেপ্টেম্বর- নভেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম চলে। জানুয়ারির মধ্যেই বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হয়ে যায়।
তবে গত বছর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন মোট ১৩.৬৭ লাখ জন শিক্ষার্থী, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১.৬১ লাখ শিক্ষার্থী।