সাতক্ষীরায় ভারত-ফেরত বাংলাদেশিরা কোয়ারেন্টিনে ‘অনাহারে’
ভারত থেকে যশোর বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফেরা ২৫০ জন বাংলাদেশিকে সাতক্ষীরায় সাতটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন এসব বাংলাদেশি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থেকে তারপর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন।
তবে কোয়ারেন্টিনে থাকা এসব বাংলাদেশির অভিযোগ, টাকা না থাকায় খেতে পারছেন না তারা। এছাড়া হোটেলগুলোতে নানা ভোগান্তি রয়েছে। তবে প্রশাসন বলছে, নিজ খরচে থাকা ও খাওয়ার শর্তেই দেশে ফিরেছেন তারা।
সাতক্ষীরা শহরের আবাসিক হোটেল রজনী, হাসান, উত্তরা, টাইগার প্লাস, কাশেম ও আরও তিন হোটেলে রয়েছেন ২৫০ জন বাংলাদেশি। তারা সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। গত বুধবার (৫ মে) থেকে আজ (শুক্রবার, ৭ মে) সকাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তাদের কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়।
আবাসিক হোটেলগুলোতে কোয়ারেন্টিনে থাকা বাংলাদেশিদের অভিযোগ, হোটেলের ভাড়া ও খাওয়া খরচ নিজেদের দিতে হচ্ছে। তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসা করিয়ে এখন টাকা নেই বলে অনেকেই খেতে পারছেন না। তারা দাবি করছেন, তাদের যেন নিজ নিজ জেলায় পাঠিয়ে দিয়ে কোয়ারেন্টিন করানো হয়।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. তানজিল্লুর রহমান জানান, বর্তমানে ভারত-ফেরত ২৫০ জন বাংলাদেশি সাতক্ষীরার সাতটি আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হবে। তাছাড়া কোয়ারেন্টিনে যারা আছেন, তাদের খাবার না পাওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তারা নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকার শর্ত মেনেই দেশে ফিরেছেন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে টাকা দিলে তারা বাইরে থেকে খাবারের ব্যবস্থা করে দেবে, সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, 'যারা কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন আমরা তাদের শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত বিষয় দেখব। এর বাইরে আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই। খাবারের ব্যবস্থা আমরা করতে পারব না, বাজেটও নেই। তাছাড়া আমাদের সেভাবে কোনো ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি। কোয়ারেন্টিনের সার্বিক বিষয়টি জেলা প্রশাসন মনিটরিং করছে।'
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস. এম মোস্তফা কামাল বলেন, 'সরকারের কাছ থেকে বিশেষ পাস নিয়ে এসব বাংলাদেশি দেশে এসেছেন। এখানে কীভাবে থাকবেন, সে ব্যাপারে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে বন্ড দিয়ে এসেছেন তারা। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, প্রশাসন যেখানে থাকার ব্যবস্থা করবে, সেখাইে তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। নিজ নিজ খরচে সেখানেই অবস্থান করবেন। সুব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে।'