নতুন সরকার গঠনে ঐকমত্যে ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলো, নেতানিয়াহুর শাসনের অবসান হচ্ছে
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর টানা ১২ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে নতুন জোট সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলো।
বুধবার (২ জুন) ইসরায়েলের মধ্যপন্থীয় প্রধান বিরোধীদল ইয়েশ আতিদের নেতা ইয়ার লাপিদ এই চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, আবর্তন ব্যবস্থাপনায় এই জোটের নেতৃত্বে থাকবে ডানপন্থী ইয়ামিনা পার্টি। এই দলের প্রধান নাফতালি বেনেত প্রথম দুই বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর তিনি ইয়ার লাপিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। নতুন সরকার শপথ গ্রহণের আগে এখনও সংসদীয় ভোট হওয়া বাকি।
এক বিবৃতিতে ইয়ার লাপিদ বলেন যে, তিনি ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিনকে এই চুক্তির বিষয়ে অবহিত করেছেন। তিনি বলেন, "আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে এই সরকার সকল ইসরায়েলি নাগরিক, যারা এর পক্ষে ভোট দিয়েছে এবং যারা ভোট দেয়নি তাদের প্রত্যেকের সেবায় নিয়োজিত থাকবে"।
"এটি তার বিরোধীদের সম্মান জানাবে এবং ইসরায়েলের সমাজের প্রতিটি অংশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে"।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি ছবিতে দেখা যায়, লাপিদ , নাফতালি বেনেত এবং আরব ইসলামপন্থী রাম পার্টির নেতা মনসুর আব্বাস, এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন।
মনসুর আব্বাস গণমাধ্যমকে জানান, "সিদ্ধান্তটি সহজ ছিল না এবং এতে বিভিন্ন বিরোধী মত ছিল কিন্তু চুক্তিতে পৌঁছানোটা জরুরি ছিল।"
তিনি বলেন, "আরব সমাজের কল্যাণের জন্য এই চুক্তিতে অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে"।
প্রেসিডেন্টের কাছে দেয়া বিবৃতিতে ইয়ার লাপিদ জানান, তিনি বেনেতের সাথেই সরকারের নেতৃত্ব দেবেন, এরপর ২৭ আগস্ট ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে বেনেতের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
প্রেসিডেন্ট রিভলিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আস্থাভাজন ভোট গ্রহণের জন্য সংসদ আহবান করার ডাক দিয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬১ আসনের জন্য আটটি জোটেরই দরকার ছিল।
তবে নতুন এই জোট যদি ১২০ আসনে নেসেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়, তাহলে নতুন করে নির্বাচন হবে দেশটিতে। ফলস্বরূপ গত দুই বছরে্র মধ্যে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন দেখবে দেশটি।
এদিকে নতুন এই জোটের ফলে ইসরায়েলের রাজনীতিতে নতুন বৈচিত্র্য এসে যোগ হবে বলে ভাবা হচ্ছে। নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা বাদে রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে দলগুলোর মাঝে তেমন সাদৃশ্য নেই বললেই চলে।
নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন রয়েছেন। গত মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তিনি চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হন।
এটি ছিল গত দুই বছরে দেশটিতে চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন, যার পর তিনি জোট গঠনের জন্য মিত্র পেতে ব্যর্থ হন।
বুধবারের দীর্ঘ আলোচনাটি তেল আবিবের নিকটে একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়; গাঁজা বৈধকরণের সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে অবৈধ নির্মাণের জন্য জরিমানা, বিচার বিভাগীয় বাছাই কমিটির পদ পরিবর্তন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় এজেন্ডায় স্থান পায়।
তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের মতে, এখনো সবকিছু চূড়ান্ত হয় নি এবং এটি জোটের আস্থাভাজন ভোট জয় নিয়ে সন্দেহ তৈরি করতে পারে।
- সূত্র-বিবিসি