বিদেশি সিরামিকের উপর শুল্ক হ্রাসে দেশীয় সিরামিক শিল্প ঝুঁকিতে
দেশীয় সিরামিক শিল্প রক্ষায় বিদেশে তৈরিকৃত টাইলস আমদানির উপর ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য হ্রাস না করে আরও বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)।
পাশাপাশি দেশীয় সকল প্রকার টাইলস,স্যানিটারী ও টেবিলওয়্যার - এসব সিরামিক পণ্যের উপর উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ এ দুই অর্থ বছরের বাজেটে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রতি বর্গমিটার সিরামিক পণ্য টাইলসের উপর ২৪ টাকা শুল্ক কমানো হয়েছে, অপরদিকে দেশে তৈরি সিরামিক পণ্যের উপর ১৫% ভ্যাট নেয়ার পরেও ২০২১ সাল থেকে নতুন করে উৎপাদন পর্যায়ে সিরামিক পণ্যের উপর আরো ১৫% সম্পূরক শুল্ক নেয়া হচ্ছে। ফলে দেশীয় সিরামিক পণ্য অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে এবং মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, "প্রস্তাবিত বাজেটের এই সিদ্ধান্ত সাংঘর্ষিক, কারণ গত দুই বাজেটে বিদেশি সিরামিক পণ্য টাইলসের উপর শুল্কহার ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ২৪ টাকার মতো, আর দেশে উৎপাদিত সিরামিক পণ্যের থেকে ১৫% ভ্যাট নেয়ার পরও আবার ১৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক"।
"কারণ আমরা সরকারকে বছরে ২৫০০ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব দিয়ে থাকি,আর বিদেশি সিরামিক পণ্য থেকে সরকার বছরে ১০০ কোটি টাকাও ঠিকমতো রাজস্ব পায় না"।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন বলেন, "সরকার কে হয় দেশীয় সিরামিক পণ্যের উপর ১৫% সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় আমদানিকৃত সিরামিক পণ্যের উপর শুল্ক কর না কমিয়ে তা আরো বাড়াতে হবে। নতুবা দেশীয় সিরামিক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না, এ খাতে শীঘ্রই বড় ধরনের ধস নামবে"।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ৮৫% সিরামিক পণ্যেই এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে, যা এক সময় শতভাগ বিদেশ থেকে আমদানি হতো।
দেশে এখন সিরামিক পণ্যের বাজার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার। দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় বাজার টাইলসের, যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার। স্যানিটারিওয়্যারের বাজার ৯০০ কোটির আর তৈজসপত্রের বাজারের আকার প্রায় ৫০০ কোটি টাকার। খাতটিতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৯ হাজার কোটি টাকা।