২০২৩ সালে গেটস ফাউন্ডেশন থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন মেলিন্ডা
বিবাহবিচ্ছেদের পর বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত সাবেক জুটি বিল গেটস ও মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস বর্তমানে দুই বছর মেয়াদী 'ট্রায়াল পিরিয়ডের' মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এর উদ্দেশ্য হলো, তারা দুজন তাদের সন্তানতুল্য প্রিয় দাতা সংস্থা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার তথা সহ-সভাপতি হিসেবে থাকতে পারবেন কিনা তা যাচাই করা।
মাস দুয়েক আগে যখন এই জুটি বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানান, তখন তারা বলেছিলেন যে, তারা দুজনেই বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশন এর সহ-সভাপতি হিসেবে থাকবেন। কিন্তু বুধবার সংস্থাটির সিইও ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এক নতুন সম্ভাব্য পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
সিইও মার্ক সুজম্যান বলেন, 'দুই বছর পর যদি তারা দুজন সিদ্ধান্ত নেন যে তারা একসাথে ফাউন্ডেশনের জন্য কাজ করতে পারবেন না, তাহলে মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস সহ-সভাপতি ও ট্রাস্টির পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।'
আর এটাই যদি হয়, তাহলে বিল গেটস অবশ্যই ফাউন্ডেশনের মূল দায়িত্বে থাকবেন এবং মেলিন্ডাকে পদ ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে অর্থ প্রদান করবেন। মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস তখন বিল গেটসের কাছ থেকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি পাবেন যা দিয়ে তিনি তার মানবসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারবেন। এই সম্পত্তি ফাউন্ডেশন থেকে দেয়া টাকার হিসাব থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে।
গেটস ফাউন্ডেশন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম দাতা সংস্থা এবং এর প্রতিষ্ঠাতারা এটিকে তাদের 'চতুর্থ সন্তান' হিসেবে গণ্য করেন বলে সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন সুজম্যান। কিন্তু বিল ও মেলিন্ডার বিচ্ছেদের ঘোষণা আসার পর থেকেই ফাউন্ডেশনের সুনাম ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে। এছাড়াও, বিবাহবিচ্ছেদের খবর চাউর হওয়ার পরপরই কয়েক দশক আগে মাইক্রোসফটের কর্মীদের সাথে বিল গেটসের অন্যায্য আচরণের খবরও গণমাধ্যমের সামনে আসে।
ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে আরেকটি ধাক্কা আসে যখন গত মাসে এর প্রধান বিনিয়োগকারীদের একজন, ওয়ারেন বাফেট তার ট্রাস্টি পদ থেকে সরে দাঁড়ান। বিল গেটসের বহু পুরনো বন্ধু বাফেট তার পদত্যাগের কারণ জানাননি। তিনি বলেন, 'আমার লক্ষ্য এ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে শতভাগ সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য শারীরিকভাবে আমার উপস্থিতি অত্যাবশ্যক বলে আমি মনে করি না।'
ফাউন্ডেশনে দুজনের একত্রে পথচলার সম্ভাব্য ইতি টানার পরিকল্পনার পাশাপাশি বুধবারের বিবৃতিতে জানানো হয় যে, ফাউন্ডেশনের এনডোমেন্ট হিসেবে ১৫ বিলিয়ন ডলার চুক্তি করেছেন এই জুটি।
ফাউন্ডেশনের কাজকর্ম তদারক ও পরিচালনা করতে, সম্পদ বন্টন ও কৌশলগত নির্দেশনা দিতে এবং ফাউন্ডেশনের স্থায়ীত্ব বজায় রাখতে ট্রাস্টির সংখ্যাও বৃদ্ধি করছেন গেটসরা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত দুই দশকে সারা বিশ্বে ৫৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সাহায্য প্রদান করেছে গেটস ফাউন্ডেশন। এসব অর্থের অধিকাংশই এসেছে গেটসদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে। ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, দারিদ্র প্রশমন এবং অতি সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচিসহ অসংখ্য উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেছে তারা। সহ-চেয়ার হিসেবে গেটসরা এই সংস্থাটির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন এবং এখানকার প্রাত্যহিক কর্মকান্ড তদারকি করেছেন সুজম্যান।
- সূত্র- সিএনএন