কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধের সময়সীমা বাড়ছে
কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ জুলাই পেরিয়ে আরও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। হ্রদে প্রত্যাশিত পানি না থাকায়, এই মৌসুমে মাছ ধরার বন্ধকালীন সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন করপোরেশন সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
বুধবার এই সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই সভাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
এর আগে গত ১ মে থেকে কাপ্তাই হ্রদে প্রতি বছরের মতো মাছ আহরণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়, যার মেয়াদ আসছে ৩১ জুলাই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বছরের এই বর্ষাকালীন সময়ে হ্রদে যে হারে পানির পরিমাণ বাড়ে, এই বছর তার ন্যূনতমও বাড়েনি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত মৎস কর্মকর্তারাও। পানি না বাড়ার ফলে হ্রদে ছাড়া পোনা ঠিকভাবে যেমন বেড়ে উঠতে পারেনি, তেমনি এখন মাছ ধরা শুরু হলে পানি কম থাকায় ব্যাপকহারে মাছ ধরা পড়বে।
বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট এর রাঙামাটি কার্যালয়ের উর্ধবতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: আজহার আলী জানিয়েছেন, এই বিষয়টি আসলেই উদ্বেগের,তাই আমরা মাছ ধরা বন্ধের মেয়াদ আরও কিছু দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছি। সম্ভবত এটি ১০/১৫ দিন বেশি দীর্ঘায়িত হতে পারে।'
বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএফডিসি)'র রাঙামাটি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক নৌ কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, 'হ্রদে পানি কম থাকার বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে। কারণ হ্রদে যদি ন্যূনতম ১০৩/১০৪ ফুট পানি না থাকে তবে তা মাছের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখন পানি আছে ৮৪/৮৫ ফুট। পানি না বাড়লে এখনই মাছ ধরা শুরুর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হবে। এই বিষয়ে বুধবার একটি সভা আছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা আপাতত বন্ধের সময়সীমা আরও কিছুদিন বাড়ানোর পক্ষে।'
প্রসঙ্গত, ষাটের দশকে জল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তৈরি করা কাপ্তাই বাঁধের কারণে সৃষ্ট ৩৫৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জলাশয়টি 'কাপ্তাই হ্রদ' নামেই পরিচিত,যা পার্বত্য জেলা রাঙামাটি বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এই হ্রদে প্রায় ২৫ হাজার জেলে পরিবার মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত আছেন, যারা বছরের তিনমাস মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে সরকারের ত্রাণ সহায়তা পেয়ে থাকেন।