বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কোভিডের তৃতীয় ডোজ টিকাদান শুরু করেছে ইসরায়েল
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ফাইজারের তৃতীয় ডোজ কোভিড ভ্যাকসিন দিয়েছে ইসরায়েল। কোভিডের ডেল্টা সংক্রমণ প্রতিরোধেই পূর্ণাঙ্গভাবে দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের নতুন করে টিকা দিচ্ছে ইসরায়েল সরকার।
কোভিডের বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার বিরুদ্ধে তৃতীয় ডোজ বুস্টার কতটুকু কার্যকর তা জানতে ভূমিকা রাখবে নতুন এই উদ্যোগ।
শুক্রবার ইসরায়েলের ৬০ বছর বয়সী রাষ্ট্রপতি আইজাক হারজগ তৃতীয় ডোজ কোভিড টিকা গ্রহণ করেন। এসময় তাকে অনুসরণ করে অন্যদেরও টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পাঁচ মাস আগে যারা দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছিলেন, কেবলমাত্র তাদেরকেই টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া হবে।
গত মাসে ইসরায়েলে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা মাত্র ২০টির মতো হলেও সম্প্রতি শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দৈনিক দুই হাজারের বেশি দাঁড়িয়েছে। তবে, হাসপাতালে ভর্তি এবং কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা আপেক্ষিকভাবে কম রয়েছে।
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে ইসরায়েল ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় সামনে এনেছে। গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বে সর্বপ্রথম জোর টিকাদান কর্মসূচীর আয়োজন করে ইসরায়েল সরকার।
দেশটির বর্তমান অবস্থা থেকে ভ্যাকসিন গ্রহীতা অন্যান্য দেশের ভবিষ্যৎ অনুমান করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোভিডের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনই সবথেকে কার্যকর সুরক্ষা দিতে সক্ষম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ব্রিটিশ গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেল্টার উপসর্গজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে ফাইজারের ভ্যাকসিন ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক উপাত্ত অনুসারে, গুরুতর কোভিডের বিরুদ্ধে ফাইজারের ভ্যাকসিন ৯১ শনাক্ত পর্যন্ত এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোধে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। ২০ জুন হেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য থেকে এই প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হলেও জুন-জুলাইতে সকল ধরনের কোভিড সংক্রমণ রোধে তা ৩৯ শতাংশ এবং উপসর্গজনিত কোভিড সংক্রমণ রোধে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর বলে পাওয়া যায়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেন, "কোভিডের বিরুদ্ধে এই লড়াই বৈশ্বিক। একমাত্র মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা কোভিডকে হারাতে সক্ষম হব।"
তবে, এর আগে, ইসরায়েলের দখলকৃত অঞ্চলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ভ্যাকসিন দিতে অস্বীকার করায় তোপের মুখে পড়ে ইসরায়েল।
পরবর্তীতে কেবল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে টিকাদানের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন বিতর্কে তা থেমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এখন পর্যন্ত তৃতীয় ডোজের অনুমোদন দেয়নি।
সূত্র: দ্য হাফিংটন পোস্ট