নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত গ্রেটা থানবার্গ
কিশোর জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ ও বিশ্ব প্রতিবাদ আন্দোলন ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ কে ২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেন সুইডেনের দুই সংসদ সদস্য।
সুইডেনের এই দুই সংসদ সদস্য হলেন বাম দলের সংসদ সদস্য জেনস হলম এবং হাকান সভেলেনিং।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে লেখা একটি চিঠিতে তারা জানান, "গ্রেটা থানবার্গ একজন জলবায়ু কর্মী। এবং তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কারের যোগ্য, কেননা এত অল্প বয়স হওয়া সত্ত্বেও তিনি জলবায়ু সংকটে রাজনীতিবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন"।
চিঠিতে তারা আরও বলেন, "জলবায়ু সংকট বিশ্বে নতুন দ্বন্দ্ব এবং শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের জন্ম দেবে। তাই বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে চলার পক্ষে কাজ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ"।
এই জুটি আরও জানান, গ্রেটা থানবার্গ এবং তার ‘#ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ আন্দোলন ছাড়া বৈশ্বিক কার্যসূচিতে জলবায়ু ইস্যুটি আজকের মতো এতটা গুরুত্ব পেত না।
২০১৯ সালেও বিশ্ব শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল গ্রেটাকে। যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাত নিরসনের চেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ আবি আহমেদকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়।
নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য নমিনেশনগুলি আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে জমা দিতে হবে। প্রাক্তন বিজয়ী, কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইন প্রণেতা এবং বিশ্বজুড়ে সরকারী মন্ত্রীরা এবং নরওয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন নোবেল কমিটির সদস্য সহ হাজার হাজার মানুষ প্রার্থী প্রস্তাব দেওয়ার যোগ্য।
নোবেল কমিটি কখনই মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করে না, তবে যারা প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব করেন তারা তাদের পছন্দ প্রকাশের অনুমতি আছে।
পরিবেশ রক্ষায় ২০১৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ‘ইয়ুথ স্ট্রাইক’ আন্দোলন শুরু করেন সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ। শুরুটা সেখান থেকেই। জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না—এমন প্রতিবাদ নিয়ে সে সময় স্কুুল বাদ দিয়ে টানা তিন সপ্তাহ সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে বসে থাকেন তিনি। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নিজের আন্দোলনের কথা পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে। শুরু করেন #FridaysForFuture ট্রেন্ড।
তার শুরু করা এই আন্দোলনে ধীরে ধীরে যোগ দিতে থাকে অসংখ্য মানুষ। সবার একটাই দাবি, জলবায়ু সংকট নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে #FridaysForFuture ট্রেন্ডের মাধ্যমে স্কুলগুলোতে বিক্ষোভের আয়োজন করেছেন গ্রেটা, যেটি প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় গতবছরের ১৫ মার্চ। এদিন জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ ১০৫টি দেশের ১,৬৫৯টি স্থানে শিক্ষার্থীরা তার ডাকে সারা দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও মিছিল করে।