যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মহিলা ক্রীড়াবিদ হওয়ার পথে ১৮ বছরের রাদুকানু
যেন স্বপ্নের মতো এগুচ্ছে এমা রাদুকানুর টেনিস ক্যারিয়ার। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে নিলেন এই টিনেজার।
প্রথমবারের মতো ইউএস ওপেনের মূল পর্বে খেলতে নেমেই শিরোপা জিতে নিয়েছেন এই ব্রিটিশ বিস্ময় বালিকা। বাছাইপর্বে তিনটি এবং মূল টুর্নামেন্টে সাতটি, মোট ১০ ম্যাচ জেতা রাদুকানু ফাইনালের আগেই, ইউএস ওপেন থেকে আয় করেছেন প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার, যা ক্যারিয়ারে তার পূর্ববর্তী মোট উপার্জনের চারগুণ।
রোববারের ফাইনালের পর তার উপার্জন আরও অনেক বেড়ে যাবে বলে দাবি করছেন বিভিন্ন বিপণন এবং ব্যবসা বিশেষজ্ঞরা।
বিপণন ও স্পন্সরশিপ বিশেষজ্ঞ নাইজেল কুরি বিবিসি'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাদুকানু "বিপণন জগতের একটি স্বপ্ন", এবং এই ১৮ বছর বয়সীর সাথে চুক্তি করার জন্য "বিজ্ঞাপনদাতা এবং স্পন্সররা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে"।
মার্কেটিং বা বিপণন খাতে রাদুকানুর বয়স, তার প্রজন্ম- জেন জি, দ্বৈত ঐতিহ্য, তার ক্রমবর্ধমান প্রোফাইল এবং বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা প্রাধান্য পাবে বলে মনে করছেন এমলিয়ন বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক সাইমন চ্যাডউইক। তিনি বলেন, "বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে অনেক চুক্তির সুযোগ পাবে এমা"।
"নাইকি এবং অ্যাডিডাস তার চুক্তির জন্য লড়াই শুরু করে দিবে," বলেন কুরি।
এসব চুক্তির পর তাই স্বাভাবিকভাবেই রাদুকানুর একাউন্টে জমা হবে আরও মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার।
টেনিস খেলোয়াড়রা এমনিতেও বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদদের তালিকায় থাকেন, বিশেষ করে মহিলা ক্রীড়াবিদদের তালিকায়।
এবছর ফোর্বসের সর্বাধিক বেতনপ্রাপ্ত নারী ক্রীড়াবিদদের তালিকায় সবার উপরে ছিলেন টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা, যার মোট উপার্জন ৬ কোটি মার্কিন ডলারের ৫.৫ কোটিই এসেছে স্পন্সরশিপ ও বিপণন থেকে।
যদিও ২০১৮ সালের পর থেকে মোট চারবার গ্র্যান্ডস্লাম জেতা ওসাকার সমান খ্যাতি অর্জন করতে দেরি আছে রাদুকানুর, কিন্তু তার আকস্মিক উত্থান বিপণনের জন্য নিঃসন্দেহে লাভজনক।
আর তার এজেন্ট, আইএমজির টেনিস বিভাগের সহ-সভাপতি ম্যাক্স আইজেনবাডও নারী টেনিসের বিপণন শক্তিমত্তার ব্যাপারে ভালোই জ্ঞান রাখেন। তিনি পূর্বে প্রতিনিধিত্ব করেছেন মারিয়া শারাপোভার, যিনি তার পেশাদার ক্যারিয়ারে টানা ১১ বছর বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মহিলা ক্রীড়াবিদের মুকুট পরেছেন।
বিপণনে কেমন সফল হবেন, সেটা সময়ই বলে দিবে। কিন্তু কোর্টের খেলাতে কিন্তু শারপোভার পথেই হাঁটছেন রাদুকানু। ২০০৪ সালে শারাপোভার উইম্বলডন জয়ের পর সবচেয়ে কম বয়সী টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে রোববার গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন রাদুকানু।
এদিন নারী এককের ফাইনালে আরেক টিনেজার লেইলা ফার্নান্দেজকে ৬-৪, ৬-৩ গেমে হারিয়ে ইউএস ওপেনের শিরোপা ঘরে তুলেছেন এই ১৮ বছর বয়সী। বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা কোন খেলোয়াড়ের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জেতার দৃষ্টান্ত এটি।
- সূত্র: ইনসাইডার