পুলিশের সামনেই দুই সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিলেন ছাত্রলীগ নেতা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ভোটের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রায় সোয়া ঘণ্টা অবরুদ্ধ ও শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। তারা হলেন- বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাহবুব মমতাজী ও দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর নুরুল আমিন জাহাঙ্গীর।
শনিবার সকাল পৌঁনে ১১টার দিকে গেন্ডারিয়ার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে তাদের অবরুদ্ধ করেন গেন্ডারিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদ।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে মতিঝিল থানায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন এ ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ।
ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক জানিয়েছেন, বেলা পৌঁনে ১১টার দিকে তারা নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহের জন্য ওই মাদ্রাসায় যান। এক পর্যায়ে তারা মাদ্রাসার ৬৯৮ ও ৬৯৯ নম্বর কেন্দ্রের দোতলা এবং তিনতলার বুথে যান। সেখানকার একটি বুথ থেকে ভোট না দিতে দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন দুই ভোটার।
গনি সওদাগর নামে তাদের একজন ভোটার জানান, নিজের কোমরে অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রের বুথ দখলে রাখেন গেন্ডারিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াদ। এসব ঘটনার তথ্য ওই দুই সাংবাদিককে জানাচ্ছিলেন তারা। ওই দু’জন বলছিলেন, তারা গ্লাস আর এসি মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এরপর নৌকায় ভোট দিবেন তার আগেই তাদের বুথ থেকে জোর করে বের করে দেন। এসময় রিয়াদ ও তার অনুসারীরা ওই ভোটারকে বলেন, আপনার ভোট হয়ে গেছে।
সাংবাদিকরা জানান, তারা ওই দুই ভোটারের ছবি নেন এবং তাদের বক্তব্য নেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ তাদের পিছন থেকে এসে আচমকা কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া ভোট পরিদর্শন কার্ডও ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এসময় তাদের জামার গলার ধরে টানাহেঁচড়া করেন। মোবাইলফোন না দিলে অস্ত্রের ভয়ও দেখান রিয়াদ।
এক পর্যায়ে তিনি নিজে এবং তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সাংবাদিকদের পকেট থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। তাদের সোয়া ঘণ্টা ধরে ভোট কেন্দ্রে অবরুদ্ধ করে রাখে।
বিষয়টি তারা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার তারিকুল ইসলাম, পুলিশের কেন্দ্র ইনচার্জ এসআই মাহমুদ ও এএসআই আরিফকে জানানো হলে মোবাইল উদ্ধার করতে পারবেন না বলে জানান তারা।
বেলা ১২টার দিকে পুলিশের ওয়ারি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) হান্নানুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এলে ওই দুই সাংবাদিক বিষয়টি তাকে জানান। এরপর তিনি রিয়াদকে মোবাইল দিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। পরে রিয়াদ পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনেই সাংবাদিকদের মোবাইলের পাসওয়ার্ড নিয়ে যাবতীয় তথ্য মুছে দেন। এরপর মোবাইলফোন ওই দুই সাংবাদিককে দিয়ে দেন।
মোবাইলের তথ্য মুছে দেওয়ার সময় পুলিশের সামনে রিয়াদের কোমরে অস্ত্র বহন করতে দেখা যাচ্ছিল, তার কালো জ্যাকেটের এক পাশে অস্ত্রের একটি অংশ বেরিয়েছিল।