আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে আইন করা সম্ভব নয়: আইনমন্ত্রী
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন, তবে হাতে কম সময় থাকায় আগামী কমিশন গঠনের আগে আইন প্রণয়ন করা সম্ভব নয়। তাই আগামী নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, "সার্চ কমিটিও আইনের কাছাকাছি। এটির গেজেট করা হয় রাষ্ট্রপতির নির্দেশে। সংবিধান অনুযায়ী গেজেটও আইনের সমান বলবৎযোগ্য।"
রোববার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
এছাড়াও উচ্চআদালতে বিচারক নিয়োগে একটি আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শীঘ্রই এটি নিয়ে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এর আগেও গত বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। কোভিডের কারণে এখন নতুন আইন করে ইসি গঠনের সুযোগ নেই। এর আগে গত ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন ইসি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। এই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, "তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আর কোনো তর্কের অবকাশ নেই। কারণ, এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে। আর সুপ্রিম কোর্টের রায় যখন মানা হয়, তখন নিজেদের গর্বিত মনে হয়।"
শর্ত সাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তিতে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি সরকারের হাতে নেই বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, "এই মামলা আদালতে বিচারাধীন। মামলায় যদি জয়ী হন, তাহলে তার স্থায়ী মুক্তি হবে।"
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রে জড়িত মদদদাতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আনিসুল হক। তিনি বলেন, "কমিশন গঠনের বিষয়ে উদ্যোগও ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এই কমিশন হচ্ছে বিকৃত ইতিহাসকে ফেলে দিয়ে সত্য ইতিহাসকে সঠিক পথে চালিত করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সেটি জানানো। উচ্চআদালতে বিচারপতি নিয়োগে অচিরেই আইন করা হবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।"
বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে গত ১২ বছরের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, "নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থেকে বিচার বিভাগ অনেকটাই মুক্ত।"
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বিচারবিভাগের অবকাঠামো ও গুণগত উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রী। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিচারিক আদালতে প্রায় এক হাজার ১০০ বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।