সাবেক দেহরক্ষী জানালেন আশরাফ ঘানির লাখ লাখ ডলার চুরি করার ভিডিও আছে তার কাছে
তালেবান কর্তৃক কাবুল দখলের পর ক্ষমতাচ্যুত আফগান রাষ্ট্রপতি আশরাফ ঘানির বিরুদ্ধে চারটি গাড়ি এবং হেলিকপ্টার-ভর্তি অর্থকড়ি নিয়ে দেশ ছাড়ার অভিযোগ এসেছে বেশ কয়েকটি সূত্র থেকে। এখন পর্যন্ত সবার অভিযোগকেই নাকচ করেছেন এই রাজনীতিবিদ।
তবে এবার মুখ খুলেছেন ঘানির সাবেক প্রধান দেহরক্ষী। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে সরাসরি মিথ্যাবাদী বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির প্রতিদিনকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পিরাজ আতা শরীফি দাবি করেছেন, আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ বড় বড় ব্যাগে করে নিয়ে পালিয়েছিলেন ঘানি। এবং তার কাছে এই চৌর্যবৃত্তির ধারণকৃত ভিডিও ট্যাপ আছে বলেও জানান শরীফি।
ঘানি পালিয়ে গেলেও শরীফি আফগানিস্তানেই রয়ে গেছেন। এবং বর্তমানে তালেবানের দৃষ্টি এড়িয়ে গা-ঢাকা দিয়ে চলছেন এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শরীফি বলেন, "রাষ্ট্রপতির আগমনের আগে মন্ত্রণালয়ে পাহারায় থাকা সৈন্যদের নিরস্ত্র করা আমার কাজ ছিল। আমরা সেখানে রাষ্ট্রপতির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু তখন আমাকে একজন ফোন করে জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসার পরিবর্তে বিমানবন্দরে চলে গেছেন রাষ্ট্রপতি। প্রতিরক্ষামন্ত্রীও পালিয়ে গেছেন। আমার বসের (রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে তার পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ পরিচারকদের সবাই ছিল।
"আমার কাছে একটি (সিসিটিভি) রেকর্ডিং আছে যেখানে দেখা যায়, ঘানি চলে যাওয়ার আগে আফগান ব্যাংকের একজন ব্যক্তি তার জন্য প্রচুর টাকা নিয়ে এসেছেন। শত শত মিলিয়ন, সম্ভবত বিলিয়ন ডলার টাকা। অনেকগুলো বড় ব্যাগ, সেগুলো বেশ ভারীও ছিল। এগুলোর ভেতর চাল ছিল না অবশ্যই। মুদ্রা বিনিময় বাজারের জন্য রাখা হয় এসব অর্থ। প্রতি বৃহস্পতিবার এজন্যই এসব ডলার আনা হত। কিন্তু মুদ্রা পরিবর্তনের বদলে এসব টাকা নিয়ে পালিয়ে যান রাষ্ট্রপতি। ঘানি জানতেন শেষ পর্যন্ত কী হবে। তাই সব টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
"আমি কখনো ভাবিনি তিনি এরকম করবেন। কিন্তু আমার কাছে প্রমাণ আছে, যেটা আমি কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেই প্রকাশ করব।"
শরীফি আরও বলেন, "রাষ্ট্রপতি আমাদের কখনো বলেননি তিনি চলে যাচ্ছেন। তারা কিছু না বলে পালিয়ে গেছেন, এবং আমাকে ফেলে রেখে গেছেন।"
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেওয়া ঘানির এই অর্থ আত্মসাতকে নিয়ে সম্প্রতি তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হচ্ছে, ঘানির চুরিকৃত অর্থের প্রায় পুরোটুকুই এসেছিল মার্কিন তহবিল থেকে।
এদিকে আফগানিস্তানের কোনো এক প্রান্তে গা ঢাকা দিয়ে থাকা শরীফি ডেইলি মেইলকে বলেন, "তালেবানরা বলছে আমার কাছে নাকি ৩০০টি অস্ত্র আছে, এটা মিথ্যে। তবে আমার কাছে একটি বন্দুক আছে, এবং একটি বুলেট আছে।
"তালেবানরা যদি এখানে এসে পড়ে, তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো। ধরে ফেললে আমাকে এমনিতেও খুন করবে তারা।"
সূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট।