রানের পাহাড়ে চাপা পড়ছে বাংলাদেশ
তবে কি এক রাতেই বদলে গেল রাওয়ালপিন্ডির উইকেট! পাকিস্তানের ব্যাটিং দেখলে এমনই মনে হবে। যে উইকেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা হাবুডুবু খেয়েছেন, সেই উইকেটেই অবলীলায় রান করে চলছেন স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন পাকিস্তানের দুজন ব্যাটসম্যান, হাতে উইকেট আরও ৭টি। এরই মধ্যে পাকিস্তানের লিড দাঁড়িয়ে গেছে ১০৯ রানের।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ২৩৩ রানে জবাবে পাকিস্তানের শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় দিন শেষে স্কোরকার্ড স্বাগতিকদের জয়গানই গাইছে। ৩ উইকেটে ৩৪২ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে পাকিস্তান। ওপেনার শান মাসুদ ১০০ রান করে আউট হলেও ১৪৩ রানে অপরাজিত আছেন দলটির অন্যতম ব্যাটিং ভরসা বাবর আজম। ৬০ রানে অপরাজিত আছেন আসাদ শফিক।
ব্যাটিংয়ে নাজেহাল অবস্থা হলেও বল হাতে শুরুটা মন্দ ছিল না বাংলাদেশের। দলীয় ২ রানেই পাকিস্তানের ওপেনার আবিদ আলীকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ রাহি। ডানহাতি এই পেসারের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন আবিদ। এমন শুরুর সুবিধা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। রুবেল-এবাদতরা চেপে ধরতে পারেননি প্রতিপক্ষকে।
শুরুর চাপ মুহূর্তেই জয় করে নেন শান মাসুদ ও অধিনায়ক আজহার আলী। দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। এ সময় পুরো ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করতে থাকেন তাঁরা। বিশেষ করে শান মাসুদের ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপ। ২২.১ ওভারেই পাকিস্তানের স্কোরকার্ডে জমা হয় ৯৩ রান।
দলের দুঃসময়ে আবারও কান্ডারির ভূমিকায় হাজির হন আবু জায়েদ। ৩৪ রান করা পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলীকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তিনি। অবশ্য এরপর আবারও পাকিস্তানের ব্যাটিং শো। শান মাসুদের সঙ্গে যোগ দিয়ে দলের স্কোরকার্ডকে সমৃদ্ধ করেতে থাকেন বাবর আজম।
এই জুটিতে ২০০ ছাড়িয়ে যায় পাকিস্তান। সেঞ্চুরি তুলে নেন শান মাসুদ। টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে আর টিকতে পারেননি তিনি। ১৬০ বলে ১১টি চারে ১০০ রান করা শানের স্টাম্প ভেঙে দেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের সাফল্য এতোটুকুই। সাবলীল ব্যাটিংয়ে দিনের বাকি অংশ কাটিয়ে দেন বাবর ও আসাদ।
যদিও স্কোরকার্ডের চেহারা অন্যরকম হতে পারতো। ব্যক্তিগত দুই রানেই ক্যাচ তুলেছিলেন দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪৩ রানে অপরাজিত থাকা বাবর। কিন্তু তাইজুলের বলে বাবরের তোলা ক্যাচটি নিতে পারেননি এবাদত। যেটার খেসারত সারাদিন ধরে দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা কতোটা সাবলীল ছিল, সেটা বুঝতে খেলা না দেখে স্কোরকার্ডে চোখ রাখলেও চলছে। ৮২.৫ ওভারে ২৩৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এর চেয়ে মাত্র ৫ ওভার বেশি (৮৭.৫ ওভার) ব্যাটিং করে পাকিস্তান তুলেছে ৩৪২ রান। ব্যবধানটা স্পষ্ট। বাংলাদেশের বোলাররা যে কোনো চাপ তৈরি করতে পারেনি, সেটাও বলা বাহুল্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৮২.৫ ওভারে ২৩৩/১০ (নাজমুল হোসেন ৪৪, মিঠুন ৬৩, লিটন ৩৩; শাহিন ৪/৫৩, আব্বাস ২/১৯, ২/১১)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৮৭.৫ ওভারে ৩৪২/৩ (শান মাসুদ ১০০, বাবর ১৪৩*, আসাদ ৬০*; আবু জায়েদ ২/৬৬, তাইজুল ১/১১১)।