কান্না কেন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
'কান্নায় লাভ নেই, কান্নায় হবে না
কোনোদিন পদ্মা-মেঘনা
দিনের আলোয় শুকিয়ে যাবে সে
হবে না তো এক নদী যমুনা...'
-জেমসের এমন গানে, আবেগতাড়িত হয়ে যতই মনোবেদনা চেপে রাখুন না কেন, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কিন্তু কান্নার পক্ষে! তবে সেটি নিশ্চয়ই ছিঁচকাঁদুনে কোনো ব্যাপার নয়; বরং সত্যিকারের কান্না।
আর, অবশ্যই কারণে-অকারণে কান্নাকে মুদ্রাদোষে পরিণত করাও কাজের কথা নয়; বরং 'প্রয়োজনে' কান্না পেলে তা না চেপে যাওয়ার পক্ষেই অভিমত তাদের।
তাই কাঁদলে লোকসান নেই, বরং বেশ লাভ আছে!
চলুন, একটু বিশদ জেনে নিই:
কেন এ কান্না?
কান্না আমাদের শরীর ও মন- দুটোর জন্যই উপকারি। কেননা, এটি বিভিন্নভাবে শরীরকে ডিটক্সিফাই বা বিষমুক্ত করে। যেমন ধরুন, সিগারেটের ভস্ম, ধুলো ও বালুর কণা কোনো কারণে চোখে ঢুকে থাকলে, কান্নার মাধ্যমে চোখ পরিষ্কার হয়ে যায়।
জীবাণুমুক্ত চোখ
একটানা কাঁদলে চোখে লুব্রিকেট হয়ে যায়। এরফলে সংক্রমণ ব্যাধির ঝুঁকি কমে। এছাড়া কান্না আসলে নেত্রনালী সতেজ করে তোলে এবং চোখে আরাম এনে দেয়।
আবেগের কান্না
আবেগাক্রান্ত হয়ে কান্নাকাটি করা যে কতটা উপকারি, হয়তো আগে কখনো ভাবতেও পারেননি আপনি! বলছি, শুনুন, কর্টিসল ও অন্যান্য টক্সিনের মতো স্ট্রেস হরমোনের কারণে এ ধরনের অশ্রুবান নেমে আসে চোখে। তাই কান্নার মধ্য দিয়ে আপনি আসলে ক্ষতিকর ওই হরমোনগুলো শরীর থেকে বের করে দিয়ে ফুরফুরে হয়ে উঠতে পারবেন।
নিজেকে শান্ত করার ওষুধ
মনোবিদদের অনেকেই বিশ্বাস করেন, কান্না নিজেকে শান্ত বা প্রশমিত করার অন্যতম সেরা উপায়। আর, নিজেকে শান্ত করা আসলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে জোরাল করে তোলে। এটি প্যারাসিমপ্যাথিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় করে। যার ফলে শরীর বিশ্রাম পায় এবং হজমশক্তি বাড়ে।
বেদনাবিনাশী
ঠিকঠাক কান্না করলে শারীরিক ও মানসিক বেদনা কমে আসে। যদি দীর্ঘ সময় ধরে কাঁদলে শরীর থেকে অক্সিটসিন ও এন্ডোজেনাস ওপিওড নির্গত হয়।
মন-মেজাজ ফুরফুরে
গবেষকরা জানিয়েছেন, কান্না আমাদের মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটায়। তাছাড়া কান্নার সময় আমরা যেহেতু অজান্তেই বেশ কয়েকবার দ্রুত নিঃশ্বাস নিই, এর ফলে মস্তিষ্কের তাপমাত্রা কমে আমাদের অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
তাই বলুন, কান্না পেলে চেপে রাখার কোনো যুক্তি আছে?