কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মামলায় ১৭ জন রিমান্ডে
কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় হামলা ও ভাংচুরের মামলায় ১৭ জনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার (৩ নভেম্বর) জ্যেষ্ঠ বিচারিক ৬ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক চন্দন কান্তি নাথ এ আদেশ দেন।
কোর্ট পরিদর্শক সালাউদ্দিন আল মাহামুদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, এদিন দুপুর ১২টার দিকে আদালতে তোলা হয় ১৮ আসামিকে। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ১৭ জনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দেন বিচারক।
এর আগে, দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের এক পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে কুমিল্লার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। কুমিল্লার ঠাকুরপাড়া এলাকায় রক্ষাকালী মন্দিরে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় সাতটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৯১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা ও সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার নথিপত্র সিআইডির কাছে হস্তান্তর করেন। এর আগে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের মামলা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডি। কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, নানুয়ার দিঘির পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় প্রতিমা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস হোসেন গত ১৪ অক্টোবর ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত ছয়জন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিনে কুমিল্লা নগরীতে মন্দির ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলিম ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে এ মামলা দু'টি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই আলোকে সোমবার মামলার সব ডকুমেন্ট অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।