‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ সফটওয়্যার ব্যবহার বন্ধ করতে যাচ্ছে ফেসবুক
ফেসবুকে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওতে এখন আর চেহারা শনাক্তকরণ বা ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহার করবে না ফেসবুক। খবর বিবিসির।
ফেসবুকের চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ ও বর্ণবাদমূলক আচরণের প্রশ্নে সমালোচনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। অবশেষে এই প্রযুক্তি বন্ধের ঘোষণা দিল প্রতিষ্ঠানটি।
তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, নীতি নির্ধারকরা বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো নিয়ম-নীতি নির্ধারণ করেনি।
এখন অবধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই অ্যাপ ব্যবহারকারীরা কোনো ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই ছবিতে থাকা মানুষের চেহারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্যাগ হয়ে যায়। তবে, ছবিতে মুখ স্ক্যান ও ট্যাগ হওয়া বা না হওয়ার অপশন বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ব্যবহারকারীদের।
ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরোম পেসেন্টি এক ব্লগ পোস্টে বলেন, 'আমরা মনে করি, চলমান অনিশ্চয়তার মাঝে চেহারা শনাক্তকারী প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত করে ফেলাই সমীচীন।'
২০১৯ সালে মার্কিন সরকারের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, চেহারা শনাক্তকরণ অ্যালগরিদম আফ্রিকান-আমেরিকান এবং এশিয়ানদের চেহারার তুলনায় ককেশীয়দের চেহারা শনাক্তের ক্ষেত্রে বেশি নির্ভুল ফল দেয়। সমীক্ষায় আরও বলা হয়, এই প্রযুক্তিতে আফ্রিকান-আমেরিকান নারীদের চেহারা ভুল শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ফেসবুক যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবি স্ক্যান ও ট্যাগ করে থাকে, তা নিয়ে ২০১৫ সালে সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একদল ব্যবহারকারী। সে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে গত বছর। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফেসবুকের চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি অঙ্গরাজ্যের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষা আইনের লঙ্ঘন করছে। মামলার পর ফেসবুক ওই ব্যবহারকারীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার দিতেও রাজি হয়।
এই প্রযুক্তির ব্যবহার বিতর্কিত হয়ে ওঠায় টেক জায়ান্ট অ্যামাজন ও মাইক্রোসফৎ উভয়ই চেহারা শনাক্তকারী পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি ফেসবুকেরই সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেনের নানা ধরনের অভিযোগের পর বেশ বেকায়দায় পড়ে ফেসবুক। তার অভিযোগ, ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার চেয়ে ফেসবুকের কাছে মুনাফা অর্জনই বেশি প্রাধান্য পায়। সংস্থাটির বিরুদ্ধে অনৈতিক আচরণেরও অভিযোগ আনেন তিনি।
সেইসঙ্গে দাবি করেন, ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ তার পদ থেকে সরে না দাঁড়ালে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
- সূত্র: বিবিসি