৭০ বছর পর কোরিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণায় ‘নীতিগতভাবে’ সম্মত ৪ দেশ
প্রায় ৭০ বছর পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আনুষ্ঠানিকভাবে কোরিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণায় 'নীতিগতভাবে' সম্মত হয়েছে। সোমবার এক বক্তব্যে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। এই ঘোষণার মাধ্যমে কোরিয়া উপদ্বীপে কয়েক মাস ধরে চলতে থাকা অস্ত্র প্রতিযোগিতার উত্তেজনায় কিছুটা শীতলতা আসবে বলে ধারণা করা করছেন অন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদরা।
তবে, 'নীতিগতভাবে' চুক্তিতে সম্মত হলেও, উত্তর কোরিয়ার কিছু দাবি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তার 'শত্রুভাবাপন্ন' মনোভাবের কারণে এ বিষয়ে অগ্রগতি আটকে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুন। উত্তর কোরিয়ার দেওয়া পূর্বশর্তের কারণেই মূলত দেশগুলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বিষয়ে আলোচনায় বসতে পারেনি বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট মুন বলেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান ৭ দশকের দীর্ঘ যুদ্ধবিগ্রহ ছিল 'অস্থিতিশীল' এবং একটি আনুষ্ঠানিক শান্তি ঘোষণাই পারে পিয়ংইয়ং-এর সঙ্গে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার দরজা খুলে দিতে।
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এক বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
এছাড়া ক্যানবেরায় সংবাদমাধ্যমকে মুন আরও জানান, বেইজিংয়ে আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিককে কূটনৈতিক বয়কটকের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তার সরকার।
চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইস্যুতে সামনের বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিক বয়কট করেছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ অনেকেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা ওই অনুষ্ঠানে কোনো কূটনৈতিক বা অফিসিয়াল প্রতিনিধি পাঠাবে না। তবে এবিসি নিউজের তথ্যমতে, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার একটি মাধ্যম হিসেবে বেইজিংয়ের শীলকালীন অলিম্পিককে ব্যবহার করতে চান প্রেসিডেন্ট মুন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও অন্যান্য শীর্ষ কোরিয়ার নেতারাও শীতকালীন অলিম্পিকে যোগ দিতে পারেন।
১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলমান কোরিয়ান যুদ্ধ শেষ হয়েছিল একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। সেই যুদ্ধবিরতির প্রায় ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও দুপক্ষের মধ্যে বৈরিতা ও দ্বন্দ্বের কারণে এখনও পর্যন্ত শান্তি চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের প্রভাবশালী বোন কিম ইয়ো জং বলেছিলেন, শান্তি চুক্তির ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনায় বসতে আগ্রহী তার দেশ। তবে, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানান তিনি।
- সূত্র: ফোর্বস