ছয় মাসে মদ বিক্রি দ্বিগুণ, রেকর্ড পরিমাণ আয় কেরুর
করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের বিদেশি মদ আমদানি কম হওয়ায় দেশীয় মদের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের পণ্য বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির ডিস্টিলারি বিভাগ থেকে আয় হয় ১৭ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা ডিসেম্বরে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে দাঁড়ায় ৩৯ কোটি ১৪ লাখ টাকায়।
২০২০-২১ অর্থবছরে ডিস্টিলারিটি তার প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে বেশি, ১০৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা লাভের রেকর্ড করে। আর ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে লাভ করেছে ১২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটি পণ্য বিক্রিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/ মূসক) দিয়েছে ৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, আর গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে দেয় ৭৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
গত বছরের ডিসেম্বরে কেরু এ্যান্ড কোম্পানি ২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার মুনাফা করে, যা প্রতিষ্ঠানটির ৮৪ বছরের ইতিহাসে রেকর্ড।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতলের পাশাপাশি আগামীতে তারা কাঁচের বোতলে মদ বাজারজাত করার সম্ভাবনা নিয়ে ভাবছে।
নতুন করে এখানে বিয়ার তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা । এছাড়াও নতুন দুটি বিক্রয় কেন্দ্র চালুর বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, মিলটি আধুনিকায়নে কাজ শুরু হয়েছে। বর্ধিত চাহিদা পূরণে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে ডিস্টিলারি বিভাগটি ঢেলে সাজানো হবে।
তিনি বলেন, "ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ আয় হয়েছে। পণ্য বিক্রি হয়েছে কয়েকগুণ বেশি। চিনি কলসহ যেসব ইউনিটে লোকসান আছে তা কাটিয়ে উঠতে নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ চলছে।"
'গেল অর্থবছরের তুলনায় মূসক ও অন্যান্য খরচ বাদ দেওয়ার পর আমাদের মুনাফা ৬০-৭০ কোটি টাকা বাড়তে পারে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন মিলটির ব্যাপারে আশাবাদী'- বলছিলেন তিনি।
১৯৩৮ সালে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন মিলটি পরিচালনা করছে।
এর রয়েছে ছয়টি ইউনিট- সুগার, ডিস্টিলারি, ফার্মাসিউটিক্যাল, কমার্শিয়াল ফার্ম, আকন্দবাড়িয়া ফার্ম (পরীক্ষামূলক) এবং বায়ো-ফার্টিলাইজার। এর মধ্যে শুধু ডিস্টিলারি ও অর্গানিক ফার্টিলাইজার ইউনিটই লাভের মুখ দেখেছে।
কেরু এ্যান্ড কোম্পানির ডিস্টিলারি বিভাগে রয়েছে ৯ প্রকারের মদ: ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্রান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম এবং ওল্ড রাম।