খুব আশাবাদী, আরিফিন শুভর সাথে আমার একটা কাজ হবে: পার্নো মিত্র
নওগাঁর পতিসরে 'বিলডাকিনী' সিনেমার শুটিং করছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। সরকারি অনুদানের 'বিলডাকিনী' সিনেমাটি নির্মাণ করছেন ফজলুল কবীর তুহিন। কলকাতা থেকে নওগাঁয় গিয়ে ১৮ জানুয়ারি শুটিংয়ে যোগ দেন পার্নো মিত্র। এই ছবিতে তার সঙ্গে আছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। শুটিং সেট থেকে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন পার্নো মিত্র।
প্রশ্ন: কোভিড থেকে সেরে উঠেই মনে হয় বাংলাদেশে এলেন?
পার্নো: একদম। আমার দু'বার কোভিড হয়েছে। এবারেরটা থেকে উঠেই সোজা বাংলাদেশে এলাম। কোভিডের দিনগুলো খুব খারাপ কেটেছে।
প্রশ্ন: দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে সিনেমার শুটিং করছেন। কেমন লাগছে?
পার্নো: খুব ভালো লাগছে। যেখানে শুটিং করছি সেটা একটা গ্রাম। এই গ্রামের মানুষগুলো খুব ভালো। আমাদের সহযোগিতা তো করছেই, পাশাপাশি খুব আদর করছে। এখানে নদীতে রাতে একটা শুটিং ছিলো। সেখানে লাইট করতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছিল। এই সময়ে তারা তাদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। খেতে দিয়েছে। মানুষগুলো খুবই ভালো। শুটিং তো অনেক জায়গায় করি কিন্তু এত ভালোবাসা কোথাও পাই না। এর আগে 'ডুব' সিনেমার শুটিং করেছিলাম বাংলাদেশে। সেটার অভিজ্ঞতাও খুব ভালো ছিল।
প্রশ্ন: 'বিলডাকিনী' সিনেমায় আপনার চরিত্রটা কেমন?
পার্নো: আমি এখানে হনুফা নামের একটা চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে চরিত্রটা নানাভাবে পরিবর্তন হয়। নানা ধরনের স্ট্রাগল করে জীবনে। সে একবার প্রেগন্যানট হয়। বাচ্চাটাকে কেউ রাখতে দিতে চায় না, কিন্তু সে রাখতে চায়। এই নিয়ে দ্বন্দ্ব। বলতে পারেন একটা মেয়ের লড়াইয়ের গল্প। একটা মেয়ের সমাজে নিজের জায়গা করে নেয়ার গল্প।
প্রশ্ন: এ ধরনের চরিত্র কি আগে করা হয়েছে?
পার্নো: করেছি, অন্যরকভাবে করেছি। প্রতিটি গল্পই তো আলাদা। চরিত্রও আলাদা। সেভাবে হয়তো করা হয়েছে। মেয়েদের তো স্ট্রাগলের নানা দিক আছে, হনুফার চরিত্রও একটা দিক।
প্রশ্ন: 'বিলডাকিনী'তে আপনার সঙ্গে মোশাররফ করিমও অভিনয় করছেন। তার কথা আগে শুনেছেন নিশ্চয়?
পার্নো: শুধু শুনেছি কি! তার অনেকগুলো নাটক দেখেছি। তার অভিনীত 'টেলিভিশন' সিনেমাটা দেখেছি। আমি যখন শুনেছি এই ছবিতে তিনি অভিনয় করছেন আমি খুবই এক্সসাইটেড ছিলাম। কাজ করতে এসে বুঝলাম, উনি খুবই ব্রিলিয়ান্ট অ্যাক্টর। একইসঙ্গে দারুণ মানুষ।
প্রশ্ন: এর আগে বাংলাদেশের 'ডুব' সিনেমায় আপনি অভিনয় করেছিলেন। সেটার সাথে এর কি পার্থক্য?
পার্নো: ডুব ছিল শহরের গল্প। এটা গ্রামের গল্প। এটাই বড় রকমের পার্থক্য। ডুব ছিল ফারুকীর পরিচালনায়। আর এটি নূরদ্দিন জাহাঙ্গীরের উপন্যাস 'বিলডাকিনী' অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। গল্পে নারীশক্তি ও মাতৃত্বের স্বাধীনতার গল্প। সিনেমাটিতে বাংলাদেশ সরকারের অনুদানের পাশাপাশি সহযোগী প্রযোজনায় থাকছে ডাটা সলিউশন।
প্রশ্ন: কলকাতা ও বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই আপনি বেশ জনপ্রিয়। কেমন এনজয় করেন?
পার্নো: আমি আসলে মন দিয়ে কাজটা করি। কাজের ব্যাপারেও খুব চুজি। খুব পছন্দ না হলে কাজ করি না। এ কারণেই বোধহয় মানুষ পছন্দ করেন। আর এটা যে কলকাতা ও বাংলাদেশের মানুষেরও পছন্দ জেনে ভালো লাগলো।
প্রশ্ন: আপনি তো পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে। চাইলে তো অন্য পেশায় যেতে পারতেন?
পার্নো: একেবারেই না। আমি ছোটবেলা থেকেই চেয়েছি অভিনেত্রী হতে। সেটাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানিনা পারবো কিনা। তবে কিছু মানুষ পছন্দ করেন এটাই ভালোলাগার বিষয়।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে আর কোনো পরিচালক বা অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
পার্নো: মাঝে আমার সঙ্গে আরেফিন শুভর একটা সিনেমা হওয়ার কথা ছিল। সেটা হয়নি। কিন্তু আমাদের মধ্যে ভালো একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। আমি খুব আশাবাদী আরিফিন শুভর সাথে আমার একটা কাজ হবে। ফারুকীর (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) সাথে এখনো যোগাযোগ আছে। যদি আবার হয় ভালো হবে। তুহিন ভাই যদি আবার ডাকেন, কাজ করব। তবে আমি কখনোই পরিচালক বা সহশিল্পী দেখে কাজ করি না। গল্প ও চরিত্রটাই মুখ্য। তাছাড়া আমি ঠিকঠাক সবাইকে চিনিও না।