রোজার আগে দ্বিগুন বাড়লো বেগুন ও শসার দাম
রমজান মাস সামনে রেখে এবার বেগুন, শসাসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
তারা বলছেন, প্রতি বছর নিয়ম করেই বাড়ানো হয় দাম, তবে এবার অন্য শাক সবজির দাম কয়েক মাস ধরে বেশি ছিল। এবার রমজান সামনে রেখে আরেক দফায় বাড়ানো হলো দাম।
তবে বিক্রেতাদের কেউ বলছে, তাদের সরবরাহকারীরা দাম বাড়িয়েছেন ফলে এই দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরবরাহেও কোন ঘাটতি নেই বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিলো ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
এছাড়া, শসা গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৬০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। মানভেদে ৮০ টাকায়ও তা বিক্রি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা। তবে টমেটো গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে জাতভেদে বড় আকারের লেবু ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যেতো। ছোট আকারের লেবু গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ধনেপাতা প্রতি কেজি ১২০ থেকে বেড়ে ১৬০ টাকা হয়েছে, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা। গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি, পটল, চিচিঙ্গাসহ বেশকিছু সবজি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেশি চাওয়া হচ্ছে গত সপ্তাহের তুলনায়।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আব্দুল আলিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ফার্মগেটে বেশি দাম দেখে কারওয়ান বাজারে এসেছি এখানেও একই দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছরই রমজান সামনে রেখে সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দেয়।"
তিনি আরও বলেন, ৫ টাকার শাক ১০ থেকে ১২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এভাবে কয়েক মাস আগ থেকেই বিভিন্ন শাক সবজির দাম বেশি ছিল। এখন আবার বেশকিছু সবজির দাম ডাবল করেছে।"
দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজরের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ সেলিম টিবিএসকে বলেন, "বেশ কয়েকদিন ধরে বেগুন, শসা ও লেবু বেশি বিক্রি হচ্ছে। মূলত ক্রেতারা অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রয় করে তা মজুত করছেন। এজন্য সরবরাহকারীরা দাম কিছুটা বাড়িয়েছে।"
তবে বাজারে এসব শাক সবজি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন কারওয়ান বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী।
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে রোজার অন্যন্য খাদ্যসামগ্রীও
খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা ও দেশি মসুরের ডাল ১২৫-১৩০ টাকায়।
এছাড়া, মাঝারি দানার মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
বেড়েছে খেজুরের দামও। মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বুটের ডালের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি, যা কিছুদিন আগে ছিল ৮০-৯০ টাকার মধ্যে। আর খেসারির ডালের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, যা কিছুদিন আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে।
এদিকে আরেক দফা বেড়েছে মুরগি ও গরু মাংসের দাম। সোনালিকা মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহ ছিলো ২৮০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের প্রতি কেজি ৫৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে রুই মাছের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে, ছোট আকারের রুই ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা এবং বড় রুই বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। কৈ মাছ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করলেও এ সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়।
এছাড়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তেলাপিয়া মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা ১০ থেকে ১২ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।