কোভিডে পিছিয়ে পড়া শিশুদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার এখনই সময়: অভিজিৎ ব্যানার্জি
নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেছেন, মহামারি আমাদের সামনে শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন করে সাজানোর সুযোগ করে দিয়েছে। একই ক্লাসের পিছিয়ে পড়া শিশুরা যেন সহপাঠীদের সঙ্গে সমানতালে শিখতে পারে, তা নিশ্চিত করার সুযোগ করে দিয়েছে মহামারি।
বুধবার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর সম্পাদক ইনাম আহমেদ-এর মুখোমুখি হন এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। সেখানে তিনি শিক্ষার ওপর মহামারির প্রভাব, শিক্ষার আর্থিক মূল্য, শিক্ষাব্যবস্থাকে কীভাবে নতুন করে সাজানো যায়, কীভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করা যায়—এসব নিয়ে কথা বলেন।
টিবিএস: অধ্যাপক ব্যানার্জি, স্বাগতম। …আমরা সবাই জানি, কোভিড যে সেক্টরকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সেটি শিক্ষা। বাচ্চারা ভার্চুয়ালি ঘরে দুটো বছর বন্দি ছিল। এতে তাদের যে লার্নিং লস যেটা বলা হচ্ছে, আপনার মতে এই লসের ইম্প্যাক্ট কতখানি? কী পরিমাণ? এটার ভয়াবহতা কতখানি?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: দেখুন, এটার কতটা ইম্প্যাক্ট হবে সেটা এখন আমরা কী করি, তার ওপর নির্ভরশীল। তো এমন নয় যে, যা হবার সেটা হয়েই গেছে। আসল সমস্যাটা হচ্ছে, যে দু-বছর তারা হারিয়েছে তার ভেতরে কেউ হয়তো দুমাস হারিয়েছে, কেউ হয়তো পুরো দু-বছর হারিয়েছে। কারণ কারোর বাড়িতে হয় শিক্ষিকা মা আছেন। মা পড়িয়েছেন, বা ঠাকুরদা পড়িয়েছেন। অনেক বাড়িতে সেরকম সুযোগ থাকবে। আবার অনেক বাড়িতে, বিশেষ করে দরিদ্র বাড়িতে সে সুযোগগুলো থাকবে না।
সুতরাং যেটা দেখা যাবে সেটা হচ্ছে—আগেও আমরা দেখেছি, সব দেশেই দেখা যায়—বিশেষ করে ভারতবর্ষ এবং পাকিস্তান থেকে দেখেছি যে ক্লাসের মধ্যে বাচ্চাদের ফারাকটা অনেক। কেউ হয়তো ক্লাস থ্রির বাচ্চা, সে ক্লাস থ্রির লেভেলে আছে, কেউ হয়তো ক্লাস ওয়ানের লেভেলে আছে, কেউ হয়তো ক্লাস ওয়ানেরও তলায় আছে।
এগুলো বাস্তব। প্যানডেমিকের আগেও এটা ছিল। তারপরে যেটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে যে প্যানডেমিকের দরুন এই তফাতগুলো হয়তো আরও বেড়ে গেছে। কারণ হচ্ছে যাদের বাড়িতে সাহায্য করার লোক আছে, তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আর যাদের বাড়িতে নেই, তারা হাল ছেড়ে দিয়েছে। তা-ই যদি হয়ে থাকে, তাহলে ক্লাসের ভেতরে আপনি হয়তো দেখবেন ২০২০-এ যে ক্লাস থ্রিতে ছিল, এখন ২০২২-এ সে ক্লাস ফাইভে। কিন্তু সে যখন ক্লাস থ্রিতে ছিল তখন তার পড়াশোনা ক্লাস ওয়ানের ছিল—কিন্তু এখন সে ক্লাস ফাইভে এসেও তার পড়াশোনা আছে ক্লাস ওয়ানের লেভেলের। তাকে আপনি ক্লাস ফাইভের সিলেবাস যদি পড়ান, তার পক্ষে তো সেটা সম্পূর্ণ অনর্থক। সে কিছু পড়তেই পারে না ভালো করে, তাকে আপনি ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান পড়াচ্ছেন। সেটা যদি করা হয় তাহলে সেই বাচ্চাদের কোনো আশা নেই। তারা যেখানে ছিল সেখানেই থেকে যাবে। হয়তো নিরাশ হয়ে স্কুলে আসা ছেড়ে দেবে। মেয়ে হলে তার বাবা-মা বিয়ে দিয়ে দেবে। ছেলে হলে সে হয়তো কোনো দোকানে কাজ করবে। সুতরাং আমাদের প্রথম কর্তব্য হচ্ছে কোন বাচ্চা কোথায় আছে সেটাকে ভালো করে যাচাই করে নেওয়া। এটা করার কোনো অন্যথা নেই।
টিবিএস: আপনি কি বলছেন, তাহলে তাদের একটা টেস্ট করে নেওয়া উচিত যে কে কোন লেভেলে আছে স্কুল শুরুর সাথে সাথে?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: একদম। এবং সেটা করতে ১০ মিনিট লাগে। ভারতবর্ষে একটা এনজিও আছে। তারা প্রায় আড়াই লাখ বাচ্চাকে এটা টেস্ট করে প্রতি বছর। এটা করতে হয়তো ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগে। টেস্টটা করলেন আর জেনে নিলেন কে পড়তে পারে না, আর কে পুরোপুরি ঝরঝর করে পড়তে পারে। এটা করার পর যা করতে হবে—যে বাচ্চারা অনেক পিছিয়ে আছে তাদের আলাদা পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে যা করা হবে, তার কোনো মূল্য নেই। পড়াতে পারেন, কিন্তু তারা কিছু বুঝবে না। কী করে তাদের সত্যিকারের সুযোগ দেওয়া যায়, ক্লাসের সক্ষম যারা তাদের কাছে কী করে তাদের টেনে আনা যায়, এই নিয়ে আমাদের একটা চিন্তা করতে হবে।
এটা করা খুব শক্ত নয়। শিক্ষকরা করতে পারেন আমরা জানি। কিন্তু শিক্ষকদের খুব ভালো করে দায়িত্ব দিতে হবে—আপনাদের দায়িত্ব আগামী তিন মাস সিলেবাস পড়ানো নয়। বাচ্চারা যত ঝরঝর করে পড়তে পারে, অংকের গোড়ার যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগ করতে পারে, এদের এই স্তরে আনা আপনাদের দায়িত্ব। বাকিটা পরে দেখা যাবে। উপর থেকে এই নির্দেশনাটা আসতে হবে। শিক্ষকরা নিজেরা করবে না এটা। কারণ তাদের ভয় করবে যে, আমাদের তো দায়িত্ব সিলেবাস পড়ানো। শিক্ষকদের উপর একটা চাপ আসতে হবে যে, এটা করুন। এখনকার মতো আমরা নতুন করে ভাবব। নতুন করে বাচ্চাদের কী করে সুযোগ দিতে পারি, যাতে করে তারা শিখতে পারে, সেটার উপরে আমরা পুরোপুরি ভর করব।
টিবিএস: বিষয়টা আপনি যেভাবে বলছেন যে, তাদেরকে টেস্ট করে তাদের লেভেলটা বিচার করে সে অনুযায়ী শিক্ষা দেওয়া— এটা কি ভারতে হয়েছে? কিংবা আপনি যে দেশে আছেন, আমেরিকায়, সেখানে কি এরকম হচ্ছে?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: ভারতে কোভিডের পরে এটা হওয়ার একটু একটু করে চেষ্টা দেখা গেছে। এখনো যতটা হওয়ার সেটা হয়নি। কিন্তু কোভিডের আগেও তো এই সমস্যাটা ছিল। এই নিয়ে অনেক স্টেটে অনেক রকমভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। এবং যখন করা হয়েছে, সবসময়ই ভালো ফল দেখা গেছে। যেমন, ইউপির [উত্তর প্রদেশ] দুটো জেলা ধরে আমরা একটা র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করেছিলাম। যেখানে দেখা গিয়েছিল, ৫০ দিন ধরে দিনের আদ্ধেকটা যদি এইভাবে বেসিক স্কিল পড়ানো হয়, তাহলে তারা প্রায় এক বছরের বেশি, প্রায় দু-বছর, এগিয়ে যায়। যদি তাদের যেখানে ঘাটতি আছে সেখানে পড়ানো হয়।
টিবিএস: আপনি কি এমন কিছু বলতে চান যে, বাচ্চাদের জন্য পাঁচ ঘণ্টা যদি স্কুল থাকে সেটাকে আরও দু-ঘণ্টা কিংবা এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সে লার্নিং লসটা জোগান দেয়া?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: যে পাঁচ ঘণ্টা আছে এখন, সে পাঁচ ঘন্টার খুব একটা মূল্য নেই, যদি না তাদের একটা সাহায্য করা হয় যাতে তারা একটুখানি ক্যাচ-আপ করতে পারে। যদি এক ঘন্টা বাড়তি না করতে পারেন তাহলে সেই পাঁচ ঘণ্টাতেই সেটা করুন। স্কুলে দৈনন্দিন সিলেবাসের যে চাপ, যদি বাচ্চারা সে সিলেবাস না শিখতে পারে, তাহলে আমার কাছে তার কোনো মূল্য নেই।
টিবিএস: লার্নিং লস যেটা আমরা বলছি, দারিদ্র্যের ওপর তার প্রভাব কী? একসময় আপনি বলেছেন, দারিদ্র্য শুধু শিক্ষা দিয়ে দূর করা সম্ভব নয়। সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি থাকতে হবে সমাজে। এটা বলতে আপনি ঠিক কী বলছিলেন?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: শিক্ষার মূল্য শুধু অর্থনৈতিক নয়। আমরা প্রত্যেকে দেশের নাগরিক। শিক্ষা একটা হক আমার। আমরা পড়তে পারব, বুঝতে পারব, বিচার করতে পারব। শিক্ষাকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক মূল্যায়ন করাটা ভুল হবে। দ্বিতীয় কথা বলতে পারি, শিক্ষার ফলে মানুষের আয় বাড়ে। কতটা বাড়ে সেটা কতটুকু অর্থনৈতিক সুযোগ আছে, তার উপর নির্ভর করে। সুতরাং, যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হয়, তাহলে একটা ভয় থাকে সবসময় যে অনেক লোক শিক্ষা পেয়ে তারা সেই শিক্ষাটা ব্যবহার করতে পারবে না। শিক্ষার উপকারিতা অনেক। যেমন আমরা দেখেছি যে ঘানাতে মেয়েদের হাই স্কুলে যাওয়ার জন্য একটা স্কলারশিপ দেওয়া হয়, তারপর দেখা যায় তাদের আয় সামান্যই বাড়ে। কিন্তু তাদের বাচ্চারা আরো বেশি শিক্ষিত, সুস্থ হয়। এই মেয়েদের যে বাচ্চা হচ্ছে, সেই বাচ্চাদের আমরা দেখছি সবদিক থেকেই অনেক বেশি উন্নত। তো কথাটা হচ্ছে, শিক্ষা থেকে অর্থনৈতিক যে সুফল পাওয়া যাবে, সেটা দিয়ে শিক্ষাকে মূল্যায়ন করাটা ভুল হবে। তা সত্ত্বেও আমি বলব, দারিদ্র্যের একটা কারণ হচ্ছে যে লোকেদের শিক্ষা নেই। আরো অনেক কারণ আছে। কিন্তু যার শিক্ষা আছে সে যদি এমন জায়গায় থাকে যেখানে কোনো চাকরি নেই, সেখানে তার শিক্ষার মূল্যটা অনেক কম।
টিবিএস: অধ্যাপক ব্যানার্জি, আপনি জানেন যে আমাদের মতো দেশগুলোতে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য নানা ধরনের ইনসেন্টিভ দেয়া হয়। যেমন, ফুড ফর এডুকেশন, স্কুল ফিডিং। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে তাদের যে স্পেশাল প্রোগ্রাম, অনেকেই হয়তো উৎসাহই হারিয়ে ফেলেছে শিক্ষায়। তারা হয়তো রাস্তা-ঘাটে, মাঠে খেলে। এদেরকে আনার জন্য বিশেষ কোনো ইনসেন্টিভ প্রোগ্রাম চালু করা দরকার বলে মনে করেন কি না?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: এটা আপনি ভালো বলেছেন। ইনসেন্টিভটা কী ধরনের, এ নিয়ে খানিকটা চর্চা হওয়া দরকার। কারণ আমার অভিজ্ঞতায় ভারতবর্ষে দেখেছি যে অনেক জায়গায় বাড়িতে খাবার পাঠিয়ে দেয়। তার জন্য হয়তো বাবা-মায়েরা স্কুলে পাঠায়। কিন্তু বাচ্চাদের তাতে কতটা উদ্দীপনা আসে, আমি জানি না। তার জায়গায় যদি বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী দেয়া হয়, স্কুলে ক্রিকেটের ব্যাট কিংবা ফুটবল, হয়তো তারা বেশি উৎসাহ পাবে। এই নিয়ে আমাদেরকে আরো চর্চা করা দরকার। কারণ আমরা ধরে নিই যে, অনেক সময় বাচ্চারা এইটা চায়, ওইটা চায়। খুব দরিদ্র বাচ্চারা খেতে আসে স্কুলে, সেটা আমরা দেখেছি। কিন্তু আরো অন্যান্য বাচ্চারা, বিশেষ করে বড় বাচ্চারা, যাদের সম্বন্ধে আমার সবচেয়ে বেশি ভয়, যাদের ১২-১৪ বছর বয়স যারা, তারা হয়তো দুই বছর স্কুলে না পড়ে বাইরে কাজ করছে, প্রথমত তাদের আশ্বস্ত করতে হবে যে স্কুলগুলো তাদের জন্য খোলা আছে। তাদের সাহায্য করার সুযোগ আছে। যাতে তারা আবার যেখানে ছিল সেখানে পৌঁছে যেতে পারে বা তারও আগে পৌঁছাতে পারে।
যেটা আগেই আমি বলেছিলাম, বাচ্চাদের এখন কী স্তর, সে স্তরের ভিত্তিতে পড়ানো—সেই কথাটা এদের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি মূল্যবান। শুধু ইনসেন্টিভ কতটা, আর সাহায্য কতটা, এর ভূমিকা আমি জানি না। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, তাদের যদি আপনি বলেন যে, 'তোমরা এখন ক্লাস ফাইভে ছিলে, এখন ক্লাস সেভেনের বিষয় পড়াব, তোমরা হয়তো ক্লাস ফাইভ থেকে পড়াশোনা করোনি, এখন ক্লাস থ্রিতে পৌঁছে গেছো, পড়াশোনা না করে, পড়ার অভ্যাস ছেড়ে দিয়ে ইত্যাদি…', তাহলে তারা আসবে না। কারণ, তাদের এটা হিউমিলিয়েশন। স্কুলে আসবে, এসে কিচ্ছু পারবে না। অর্থাৎ কী করে তাদের আবার আশ্বস্ত করা যায় যে, তোমরাও পারবে, আমরা তোমাকে সাহায্য করবো, তোমরা আজকে না পারলেও কালকে পারবে—সেই লড়াইতা লড়তে হবে।
টিবিএস: অর্থাৎ এখানে একটা কমিউনিকেশন প্রোগ্রামের বোধ হয় দরকার আছে যে, তাদের বাবা-মা এবং শিক্ষার্থীদের বোঝানো যে তাদের লার্নিং লস হয়েছে। তার মানে তারা স্কুলে এসে তাদের সেই কোপ-আপ করার একটা স্পেস তাদের দেয়া হবে। এই পুরো জিনিসটা তাদেরকে বোঝানোর একটা প্রয়োজন আছে।
অভিজিৎ ব্যানার্জি: একদম ঠিক বলেছেন। আমার মনে হয় সেটা খুব দরকার যে তাদের আশ্বস্ত করা যে, না, এটা তেমন কিছুই না যে লোকে হাসবে, তুমি কিছুই জানো না। এত বড় ১৪ বছরের একটা ছেলে, কিচ্ছু জানো না, লিখতে পারো না। আমার মনে হয় তাদের মনে এই ভয় আছে যে, 'আমি তো এতদিন স্কুলে ছিলাম না।'
আমরা ভারতবর্ষে দেখেছি যে অনেক বাচ্চা যারা দোকান-বাজারে কাজ করে, তাদের জিজ্ঞেস করে দেখেছি যে তুমি স্কুলে নেই কেনো? বলে যে, স্কুলে তো আমি কিছু পারি না। এজন্য আমার যেতে ভালো লাগে না। এমন না যে তাদের বাবা-মা তাদের জোর করে পাঠায়। তারাই যেতে চায় না। একটা স্কুল সিস্টেমের প্রধান ব্যর্থতা হচ্ছে বাচ্চাদের কাছে সেটা আকর্ষণীয় নয়। আমার বাচ্চারা উৎসাহ করে স্কুলে যায়। কারণ, স্কুলে মজা।
টিবিএস: অধ্যাপক ব্যানার্জি, আপনার কাছে আমার একটা শেষ প্রশ্ন। আপনি বলেছিলেন যে, শিক্ষার একটা বড় ভূমিকা হচ্ছে গনতন্ত্রে। শিক্ষা গণতন্ত্রের জন্য একটা বড় জিনিস। কিন্তু আমরা কি এমনও দেশ জানি না যেখানে এডুকেশন অনেক হাই, কিন্তু ডেমোক্রেসি নাই। এই বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
অভিজিৎ ব্যানার্জি: দেখেন, আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে যে, তখন সে দেশগুলোকে যা করতে হয় সেটা হচ্ছে, অনেক ধরনের, অনেকভাবে লোকেরা যাতে কোনো প্রশ্ন না করে, সে প্রশ্ন বন্ধ করার জন্য নানা রকম [ব্যবস্থা] করতে হয় তাদের। মানে, চীনে দেশে আমরা দেখেছি যে যদি আপনি কিছু জানতে চান, জানাটা কী করে আরও শক্ত করা যায়, তার জন্য নানা রকমের প্রচেষ্টা আছে। সুতরাং, তা সত্ত্বেও কতদিন এইভাবে লোকেদের খানিকটা অজ্ঞ করে রাখাটা সম্ভব হবে আমি জানি না। শিক্ষা যখন তারা পেয়েছেন, তাদের মনে একটা প্রশ্ন আছে। সে প্রশ্নগুলোকে কতদিন চেপে রাখা যাবে, আমি জানি না।
টিবিএস: অধ্যাপক ব্যানার্জি, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য।
অভিজিৎ ব্যানার্জি: ভালো থাকবেন।
টিবিএস: আপনিও ভালো থাকবেন।