বাহাউদ্দিনকে অনুরোধ করেছিলাম, কুমিল্লা ছেড়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি: সিইসি
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে এলাকা ছাড়ার কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি, বরং বিনীত অনুরোধ করা হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আজ (২০ জুন) বেলা ১১টায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরবর্তী গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
স্থানীয় এমপিকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, "আমরা প্রায়ই শুনছি তাকে নির্বাচন কমিশন থেকে আদেশ করা হয়েছে এলাকা ত্যাগ করার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন থেকে কখনই একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে এলাকা ত্যাগ করার আদেশ করা হয়নি। আমরা তাকে প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখিনি। কিন্তু কেউ কেউ বলছেন উনি কৌশলে অংশ নিয়েছেন। আমাদের একটা প্রত্যাশা ছিলো ওনাকে যদি অনুরোধ করি তাহলে আর কথা উঠবে না।"
তিনি বলেন, "আচরণবিধি অনুযায়ী উনি (বাহাউদ্দিন) অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সংসদ সদস্য কেন, কোনো সাধারণ মানুষকেও তার এলাকা ত্যাগের আদেশ দিতে পারে না। আমরাও বাহাউদ্দিনকে এলাকা ত্যাগ করার কোন আদেশ করিনি। তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম, সেই চিঠি আছে। কিন্তু চারদিকে ছড়িয়ে গেলো আদেশ করার পরও তিনি প্রতিপালন করতে পারলেন না। এ কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়।"
সিইসি বলেন, "এর আগে বলা হয়েছিলো, একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী গিয়েছিলেন যাকে এক ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগ করাতে পেরেছিলাম। হয়ত পেরেছেন, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সেক্ষেত্রে সেই মন্ত্রী ছিলেন বহিরাগত। আর বাহাউদ্দিনের ওটা স্থায়ী ঠিকানা। একজন মানুষ তার বাড়িতে থাকতে পারবে না তা তো নয়। আমরা একটু বিনীতভাবে অনুরোধ করেছিলাম, হয়ত উনি ডিস্টার্ব করছেন বা কৌশলে প্রচারণা করছেন। সেজন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছিলো। আমরা আইন-কানুন দেখে চিঠি দিয়েছিলাম। একজন্য ব্যক্তিকে তার এলাকা থেকে বহিষ্কার করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই।"
তিনি আরও বলেন, "বাহাউদ্দিন সাহেব কোন আইন ভঙ্গ করেননি। নিয়ম ভঙ্গ করেননি। অভিযোগ আসে, তিনি গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাই তাকে অনুরোধ করেছি। অনুরোধ করলে তিনি রাখতেও পারেন, নাও রাখতে পারেন। বিনীতভাবে অনুরোধ আর নির্দেশ এক করে দেখার সুযোগ নেই।"
উল্লেখ্য, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জিতেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে জয় পান তিনি।
১০৫ কেন্দ্রের ভোট গণনায় রিফাত পান ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পান ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট।
নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করে মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করে বলেন, "আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ফলাফল বানচাল করেছে, আমি হাইকোর্টে যাব।"
এর আগে ২০১২ সালের কুমিল্লা সিটির নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফজাল খানকে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে হারান সাক্কু। ২০১৭ সালে তিনি আফজালের কন্যা আনজুম সুলতানা সিমাকে প্রায় ১০ হাজার ভোটে হারান।