নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ
চলতি অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ এই নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যার পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। গেল অর্থবছরের একই সময়েও মোট বিতরণ ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশই ছিল।
কৃষি ঋণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জন্য ২৬,২৯০ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে। এর মধ্যে জুলাই-মার্চ সময়ে বিতরণ করা হয়েছে ১৮,৫১৩ কোটি টাকা।
তবে নয় মাসে ঋণ বিতরণের চেয়ে আদায় অনেক বেশি হয়েছে। জুলাই-মার্চে ১৯,৭৭৪ কোটি টাকা কৃষি ঋণ আদায় হয়েছে। তবে একই সময়ে কৃষিখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪,২৯৮ কোটি টাকা। জুলাই-ফেব্রুয়ারি এই ৮ মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪,৩৮৩ কোটি টাকা।
সেই হিসেবে মার্চ মাসে কৃষকদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে ৮৫ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, 'খেলাপি ঋণ আদায় প্রক্রিয়া জোরদার করায় খেলাপি ঋণ কমছে'।
তবে কোভিড এর কারণে আদায় পরিস্থিতি কিছুটা শ্লথ হয়ে গেছে। কোভিড পরবর্তী আদায় আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কৃষকরা বরাবরই অন্য গ্রাহকদের তুলনায় বেশি সচেতন বলে তিনি মনে করেন।
চলমান কৃষি ঋণ কর্মসূচির বাইরে কোভিডের কারণে সরকার গেল বছর ৫ হাজার কোটি টাকার যে রিফাইন্যান্স স্কিম করেছিল তা থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩,৭২২ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড নয় মাসে বিতরণ করেছে ৮২৪ কোটি টাকা।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রিফাইন্যান্স স্কিম থেকে ঋণ বিতরণ বাড়াতে হবে। সময়মতো কৃষি ঋণ বিতরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সময়মতো কৃষক ঋণ না পেলে দুই ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে। প্রথমত তার শস্য উৎপাদন ব্যহত হয়, দ্বিতীয়ত সময়মতো কাজে না লাগলেও ঋণের টাকা ঠিকই পরিশোধ করতে হয়'।
বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর বাইরে অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণ ও আদায়ে দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কৃষিতে প্রযুক্তির যে ব্যবহার বাড়ছে তা উৎসাহিত করা এবং সোলার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেচ ব্যবস্থার জন্য ঋণ সুবিধা বাড়ানোর কথা বলেন।
এই অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেন, এছাড়া শস্য ও শস্য বর্হিভূত ঋণের বাইরে শাকসবজি কিংবা পেঁয়াজের মত শস্য গুদামজাত করার সুবিধা বাড়ানোর জন্য এ খাতে ঋণ সুবিধা বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া বিদ্যমান ঋণ স্কিমের আওতা বাড়িয়ে বিদেশ এবং শহর থেকে যারা গ্রামে ফিরে গেছে তাদের মধ্যে যারা কৃষি উৎপাদনে আগ্রহী তাদের ঋণ সুবিধা দিতে হবে।