সরকারের ৩২ হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে নতুন করে কৃচ্ছ্রসাধন
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাভাবের প্রভাবে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রতা সাধনের অংশ হিসেবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব ধরনের যানবাহন, জলযান ও আকাশযান কেনা বন্ধ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আপ্যায়ন ব্যয় ও ভ্রমণ ব্যয়ও অর্ধেক কমানো হয়েছে।
এছাড়া, স্টেশনারি ও আসবাবপত্র কেনা, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক উপকরণ এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেনার বরাদ্দও ৫০ শতাংশ কাটা হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প, কর্মসূচি ও স্কিমগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা সভায় অংশ নিলে যে সম্মানী পেতেন, তার পুরোটাই বাতিল করা হয়েছে।
শুধু সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই নয়; আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় উভয় ক্ষেত্রেই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
রোববার পৃথক দুই পরিপত্রে এসব সিদ্ধান্ত জানিয়েছে অর্থ বিভাগ। এতে চলতি অর্থবছরে সরকারের প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া, অন্য এক পরিপত্রে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ পাওয়া ১,৪৮৭টি প্রকল্পকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে 'এ', 'বি' ও 'সি' ক্যাটাগরিতে ভাগ করে 'এ' ক্যাটাগরির প্রকল্প বাস্তবায়নে শতভাগ বরাদ্দ অক্ষুণ্ণ রেখে 'বি' ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর বরাদ্দের সরকারি অংশের ২৫ শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। আর 'সি' ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো চলতি অর্থবছর কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটকালীন পরিস্থিতিতে 'বেস্ট ভ্যালু ফর মানি' নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। অর্থবিভাগ রোববার এ বিষয়েও একটি পৃথক পরিপত্র জারি করেছে।
নতুন এ সিদ্ধান্তের কারণে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে কী পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব জানাতে না পারলেও অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, এতেও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে করোনা আঘাত হানার পর লকডাউনের সময়ও সরকার ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে উন্নয়ন প্রকল্পকে তিনটি ভাগে ভাগ করে উচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্পে বরাদ্দ ঠিক রেখে মধ্যম অগ্রাধিকার প্রকল্পের জিওবি অংশের বরাদ্দ ৫০ শতাংশ কমানো এবং নিম্ন অগ্রাধিকার প্রকল্পে বরাদ্দ স্থগিত রেখেছিল।
ওই সময় সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ এবং গাড়ি কেনা শতভাগ নিষিদ্ধ করা হয়। এসব উদ্যোগের ফলে ওই অর্থবছরে সরকারের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দেশে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য শুরুর পর গত অর্থবছরে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি গাড়ি কেনার ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারের ভর্তুকি ব্যয় মেটাতে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আমদানি ব্যয় বিপুল পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি ২৭ বিলিয়ন ডলার ও চলতি হিসাব ব্যালান্সে ঘাটতি ১৫ বিলিয়ন ডলার পেরিয়েছে।
সরকার ইতিমধ্যে বিলাস পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করায় রপ্তানি আয় কমাসহ সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী সিদ্ধান্তগুলোকে ইতিবাচক মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কোভিডকালীন সময়ে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন পেছানোর পাশাপাশি শুধু গাড়ি কেনা ও বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করা হয়েছিল। বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি কোভিড মহামারির চেয়েও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কায় এ বছর আরও বেশি ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে।
এ কারণেই প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়া; গাড়ি কেনা, বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করার পাশাপাশি এ বছর উন্নয়ন প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সম্মানী বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া স্টেশনারি কেনা, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি কেনা, আপ্যায়ন ব্যয়, ভ্রমণ ব্যয়, স্টেশনারি ও আসবাবপত্র কেনায় বরাদ্দ ৫০ শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। কোভিডকালীন সময়েও এসব খাতের বরাদ্দ কমানো হয়নি।
ব্যয় সাশ্রয়ের এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া যৌক্তিক হয়েছে উল্লেখ করে সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, সরকার বাজেটে যেসব চ্যালেঞ্জ ও টার্গেট চিহ্নিত করেছে, সেগুলো অর্জনের জন্য এসব সিদ্ধান্ত খুবই বাস্তবসম্মত হয়েছে।
'বাজেটের মূল লক্ষ্য হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমানো। বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত মুদ্রানীতিও একই লক্ষ্যে সংকোচনমুখী করা হয়েছে। এসব দিক বিবেচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় সাশ্রয়ী সিদ্ধান্তগুলো খুবই ইতিবাচক,' যোগ করেন তিনি।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর (সিপিডি) ডিশটিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, মূল্যস্ফীতি, বাড়তি আমদানি ব্যয়, বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ও মূদ্রার বিনিময় হারে চাপের প্রেক্ষিতে এই মূহূর্তে সরকারি ব্যয় কমানোর কোনো বিকল্প নেই।'
তিনি বলেন, গুরুত্বের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার চিহ্নিত করে সামর্থ্য অনুযায়ী সীমিতসংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তও ইতিবাচক ফল দেবে।
কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের কারণে কিছুটা আর্থিক ক্ষতি হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যথাসময়ে শেষ করতে না পারলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যায়। সুফল পেতে বাড়তি সময় অপেক্ষার কারণে প্রকৃত রিটার্নও কমে আসে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, 'সরকারি অর্থ ব্যয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি নিশ্চিত করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'সরকারি কর্মকর্তারা নিজেদের রুটিন ওয়ার্কের কাজ করেই অনেক সময় সম্মানীর নামে অর্থ নিয়ে থাকেন। এই ধরনের ব্যয় কমিয়েও দক্ষতার সাথে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়।
'সার্বিক বিবেচনায় অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়া সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি চাপ মোকাবেলায় কম সুদে বিদেশি ঋণ সংগ্রহের কাজও অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে কিছু পণ্যের আমদানিও নিষিদ্ধ করতে হবে।'
কোন খাতে কত সাশ্রয়
চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন, জলযান ও আকাশযান কেনায় ৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার পুরোটাই সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা।
এছাড়া প্রফেশনাল সার্ভিস, অনারারিয়ামস ও স্পেশাল এক্সপেন্স খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। উন্নয়ন প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সম্মানী এই খাত থেকেই ব্যয় হয়। চলতি অর্থবছরে তাদের সম্মানী দেওয়া হবে না।
আপ্যায়ন ব্যয়সহ প্রশাসনিক ব্যয় খাতে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ১০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে আপ্যায়ন খাতে মোট বরাদ্দের ৫০ শতাংশ ব্যয় করতে পারবে মন্ত্রণালয়গুলো।
ভ্রমণ ও বদলিতে চলতি অর্থবছর বরাদ্দের পরিমাণ ২,১৬৭ কোটি টাকা। এর ৫০ শতাংশ সাশ্রয় করবে সরকার। একইভাবে মুদ্রণ ও মনিহারি খাতে বরাদ্দের ৫০ শতাংশ সাশ্রয় করা হবে। এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ২,৪০৩ কোটি টাকা।
কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক কেনাকাটায় বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে ২,২৩৮ কোটি টাকা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র কেনাকাটার জন্য বরাদ্দ ১৫ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। এ দুটি খাত থেকেও সরকার অর্ধেক অর্থ সাশ্রয় করবে।
দেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণে মোট বরাদ্দ রয়েছে ৪,৯০৪ কোটি টাকা, যার অর্ধেক ব্যয় করতে পারবে মন্ত্রণালয়গুলো।
বেস্ট ভ্যালু ফর মানি নিশ্চিত করতে চায় সরকার
সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি বিদেশি সহায়তার প্রকল্পগুলোকে 'এ' ক্যাটাগরিতে রেখে তা বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে এবং কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো 'এ' ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।
অর্থাৎ এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বাজেটে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তার শতভাগ ব্যয় করা যাবে। এ ধরনের প্রকল্পের সংখ্যা ৭ শতাধিক বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রকল্পগুলোকে তিন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর এই পরিপত্র জারি করেছে অর্থ বিভাগ।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, 'এ' ক্যাটাগরির প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন মন্ত্রণালয় সাফল্য দেখাতে পারলে এবং এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলোর বাস্তবায়ন সক্ষমতা ভালো হলে 'সি' ক্যাটাগরির প্রকল্পে বরাদ্দের অর্থও 'এ' ক্যাটাগরির প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবে।
'বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় "বেস্ট ভ্যালু ফর মানি" নিশ্চিত করতে মেগা প্রকল্পসহ যেসব প্রকল্প চলতি অর্থবছর সমাপ্ত হবে, সেগুলোর বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে সরকার। তাহলে এসব প্রকল্প থেকে যে অর্থনৈতিক রিটার্ন আসবে, তা এই সংকট মোকাবেলায় কাজে লাগবে,' জানান একজন কর্মকর্তা।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছর বরাদ্দপ্রাপ্ত ১,৪৮৭ প্রকল্পের মধ্যে এ বছরই সমাপ্ত হবে ২৮০টি প্রকল্প। এছাড়া ২৯৫টি প্রকল্পে বিদেশি অর্থায়ন রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি-সংশ্লিষ্ট ১৫০টি প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট ৬৬টি প্রকল্প 'এ' ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৫০০ শতাধিক প্রকল্প 'বি' ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। এসব প্রকল্পে সরকারি তহবিল থেকে মোট যে পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তার ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। তবে এসব প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন থাকলে তার শতভাগ ব্যয় করা যাবে।
'যেসব প্রকল্প আগামী দুই-তিন বছর ধরে বাস্তবায়ন হতে থাকবে এবং এই মুহূর্তে বাস্তবায়নের গতি একটু স্লো হলেও অর্থনীতিতে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না, সেগুলোকে "বি" ক্যাটাগরিতে স্থান দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,' জানান অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা।
আর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা কিংবা প্রশিক্ষণ-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোকে 'সি' ক্যাটাগরিতে স্থান দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এসব প্রকল্পে বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কোনো অর্থ ব্যয় করা যাবে না। এ ধরনের প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ১৫০ হতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রকল্প রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে ৬টি 'এ' ক্যাটাগরিতে এবং ৫টি 'বি' ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে।
'এ' ক্যাটাগরিভূক্ত প্রকল্পগুলো হলো—নারাণগঞ্জের আড়াইহাজার ও চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রকল্প, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর উন্নয়ন প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মিরসরাই ১ম পর্যায় (১ম সংশোধিত)।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন 'বি' ক্যাটাগরিভূক্ত প্রকল্পগুলো হলো—বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যাতীত), খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শক্তিশালীকরণ, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প (৪র্থ সংশোধিত) এবং আশ্রয়ণ-৩ (১ম সংশোধিত)।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দপ্রাপ্ত ২৫টি প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংশ্লিষ্ট তিনটি প্রকল্পসহ মোট ৮টি প্রকল্প 'এ' ক্যাটাগরিতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার স্থাপনসহ ১৬টি প্রকল্প 'বি' ক্যাটাগরিতে এবং বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণা-সংক্রান্ত সুবিধাদি স্থাপন প্রকল্পটি 'সি' ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে।