মে মাসে সরকারের ব্যাংক ঋণ ১৩,০১৫ কোটি টাকা; একমাসে সর্বোচ্চ
অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ কমিয়ে তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের চাহিদা বাড়িয়েছে সরকার। শুধু মে মাসেই এসব ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ১৩,০১৫ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
যদিও একই মাসে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো ঋণ পরিশোধ করেছে ২,৭৮৩ কোটি টাকা।
মে শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১,৬১০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২,১৪৬ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা বলছেন, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফিতি বেড়ে যাচ্ছে; এরই মধ্যে সরকার বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়ানোয় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-মে) পর্যন্ত এগারো মাসে সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে (কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক) থেকে ঋণ নিয়েছে ৯২,২৮৮ কোটি টাকা, যা সরকারের অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৮২.৬৮ শতাংশ।
যদিও আগের অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩২,৫১৫ কোটি টাকা।
এছাড়া, তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে চলতি অর্থবছরে সরকার ঋণ নিয়েছে ২০,৬৭৮ কোটি টাকা; যদিও আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩০,৩৬৮ কোটি টাকা।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "সরকারের যে উৎস থেকে রাজস্ব বাড়ানো উচিত, সেখান থেকে না বাড়ার কারণে ঘাটতি বাজেটের জন্য ব্যাংক ঋণ বাড়িয়েছে সরকার।"
তিনি বলেন, "সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণের চেয়ে তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এই ঋণ বাড়লে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমবে।"
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩,৭০,০০০ কোটি টাকা। যদিও অর্থবছরের দশমাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২,৫০,০০০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৬৭ শতাংশ।
আরেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করা শর্তে টিবিএসকে বলেন, "গত কয়েকমাসে ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ; বাড়ছে যার কারণে সরকার ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এছাড়া, বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোও সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করছে।"
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এপ্রিল মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের আমানত দাঁড়িয়েছে ১৫.৪৮ লাখ কোটি টাকা। মার্চ মাসে এটি ছিল ১৫.২৩ লাখ কোটি টাকা।