পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াচ্ছে চীন
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতায় ২০১৯ সালের পর থেকে চলতি বছর নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারে আরও ৩০টি নতুন 'বিস্ফোরকমুখ' বা 'ওয়্যারহেড' সংযোজন করেছে চীন।
চীনের পাশাপাশি বিশ্বের আরও পাঁচটি দেশ সংখ্যাবৃদ্ধির এ প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে।
আজ সোমবার স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউড-সিপ্রি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে চলা অন্য দেশগুলো হচ্ছে; ভারত, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, ইসরায়েল এবং উত্তর কোরিয়া। তবে এই সবগুলো দেশ মিলে মাত্র ২০টি ওয়্যারহেড তৈরি করে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
সিপ্রির এই প্রতিবেদনে বলা হয়, "পারমাণবিক অস্ত্রাগারে নতুন প্রযুক্তির অস্ত্র যুক্ত করার উল্লেখযোগ্য গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে চীনে। দেশটি নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারের আধুনিকায়নেও মনোযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দুই চির-বৈরী প্রতিবেশী ভারত এবং পাকিস্তানও তাদের অস্ত্রসম্ভার বাড়াচ্ছে।"
পারমাণবিক বোমার মতো ব্যাপক গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে বিশ্বের নয়টি দেশের কাছে। এরমধ্যে ছয়টি দেশ গতবছরের তুলনায় পারমাণবিক ওয়্যারহেডের সংখ্যা বাড়ানো সত্ত্বেও, বৈশ্বিকভাবে এর মজুদ কমেছে।
পৃথিবীর সিংহভাগ পরমাণু ওয়্যারহেড আছে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। গত এক বছরে দেশদুটি তাদের পুরোনা প্রযুক্তির অস্ত্রগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে। এর ফলেই বৈশ্বিক পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সংকুচিত হয়েছে।
তবে একইসঙ্গে দেশদুটি নিজেদের অস্ত্রাগারের ওয়ারহেডগুলোর আধুনিকায়নে অত্যন্ত ব্যয়বহুল কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যার আওতায় যুক্ত হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পরমাণু বোমা এবং তা শত্রুর দিকে উৎক্ষেপণে সক্ষম অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান। পরমাণু অস্ত্র তৈরির কারখানাগুলিকেও আধুনিকায়ন করছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করেছে এক হাজার ৭৫০টি সক্রিয় ওয়্যারহেড বা বিস্ফোরকমুখ। এগুলো বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটি ও সাবমেরিন বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্রে স্থাপন করা হয়েছে। আরও চার হাজার ৫০টি পুরোনো অস্ত্র প্রত্যাহারের পর তা নিস্ক্রিয় করার তালিকায় অপেক্ষা করছে।
পক্ষান্তরে রাশিয়া মোতায়েন করে রেখেছে এক হাজার ৫৭০টি সক্রিয় ওয়্যারহেড। আর ৪ হাজার ৮০৫টি পুরানো অস্ত্র সংরক্ষিত অবস্থায় নিষ্ক্রিয় করার অপেক্ষায় রয়েছে।
চলতি বছরের শুরু নাগাদ পরমাণু অস্ত্রধর ৯টি দেশ; যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল এবং উত্তর কোরিয়ার কাছে মোট ১৩ হাজার ৪০০টি পারমাণবিক অস্ত্র ছিল, বলে সিপ্রি অনুমান করছে।
এর মধ্যে সব দেশ মিলিয়ে মোতায়েন করেছে তিন হাজার ৭২০টি ওয়্যারহেড। এছাড়াও, জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সর্বদা প্রস্তুত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে আরও এক হাজার ৮০০টি অস্ত্র।