প্যান্ডোরা পেপারস: অভিযুক্ত বিশ্বনেতাদের দাবি, তারা কোনো অন্যায় করেননি
অফশোর কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে সম্পদের বড় অংশ লুকিয়ে রাখার নথিপত্র ফাঁস হওয়ার পর, বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা দাবি করেছেন, তারা কোনো অন্যায় করেননি।
লুকিয়ে রাখা সম্পদের আর্থিক নথিপত্র, প্যান্ডোরা পেপারসে রয়েছে কমপক্ষে ১২ মিলিয়ন ফাইল। ইতোমধ্যে, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির খেতাবও পেয়েছে এই তদন্ত।
কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসাইন সহ বর্তমান ও সাবেক প্রায় ৩৫ জন নেতার নাম।
তবে, দুজনেই বিবৃতি জারি করে বলেছেন, তারা ভুল বা অন্যায় কিছু করেননি।
জর্ডানের রাজপ্রাসাদ বলেছে, বাদশাহ আবদুল্লাহর বিদেশে সম্পত্তির মালিক হওয়া "অস্বাভাবিক বা অনুচিত কিছু নয়"।
ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাদশাহ আবদুল্লাহ গোপনে যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ গড়তে ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ করেছেন।
এদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার ঘনিষ্ট জনদের উপর আসা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে এটা স্পষ্ট নয় যে এটি আসলে কী ধরনের তথ্য। আমরা সেখানে পুতিনের ঘনিষ্টজনদের কোনো লুকোনো সম্পদ দেখতে পাইনি।"
এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে উল্লেখযোগ্য আরও যেসব নেতাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- চেক প্রজাতন্ত্রের আন্দ্রেজ বাবিস, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
অভিযোগ অস্বীকার করে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী এক টুইটে দাবি করেছেন, সামনের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই এমন অভিযোগ আনা হয়েছে তার উপরে।
ঠিক একইভাবে কেনিয়াত্তা এবং পিনেরা সহ আরও কয়েকজন নেতা নানা যুক্তি দেখিয়ে দাবি করেছেন, তারা কোনো অন্যায় করেননি। আবার প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ সহ অনেককেই এ ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্যান্ডোরা পেপারসের সঙ্গে যুক্ত সকল পাকিস্তানি নাগরিককে তদন্তের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন। তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ কয়েকশত পাকিস্তানি এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত।
বিবিসি প্যানোরমা এবং যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা গার্ডিয়ানের নেতৃত্বাধীন ওয়াশিংটন ডিসির ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে), এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। আইসিআইজে ১৪০টিরও বেশি মিডিয়া সংস্থার সঙ্গে বৈশ্বিক এ তদন্তে কাজ করছে।
১১৭টি দেশের ৬০০ এরও বেশি সাংবাদিক লুকিয়ে রাখা সম্পদ অনুসন্ধানের এ তদন্ত কাজে জড়িত রয়েছেন।
- সূত্র: বিবিসি