ডিঙ্গি নৌকায় করে সাগরে জলদস্যুদের ছেড়ে দিল ডেনমার্ক
ছয় সপ্তাহ ধরে পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে যুদ্ধজাহাজে আটক থাকা তিন সন্দেহভাজন জলদস্যুকে মুক্তি দিয়েছে ডেনমার্ক। গিনি উপসাগরে ছোট একটি ডিঙ্গি নৌকায় খাবার ও জ্বালানিসহ তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গেল বছরের নভেম্বরে গিনি উপসাগরে এক মারাত্মক গোলাগুলির পর তিনজনকে আটক করেছিল ডেনিশ সশস্ত্র বাহিনী। তারা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে এমন কোনো দেশ তারা খুঁজে পাননি যারা অভিযুক্ত জলদস্যুদের নিয়ে যাবে। তাই তীরে পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও জ্বালানিসহ উপসাগরের নাইজেরিয়ার জলসীমার কাছে ছোট একটি নৌকায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডেনিশ কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ নভেম্বর সন্দেহভাজন জলদস্যুরা একটি কন্টেইনার জাহাজে আক্রমণের পর, সেখানে মারাত্মক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় প্রতিরক্ষার খাতিরে গুলি চালায় ডেনিশ সামরিক বাহিনী। গুলিতে প্রাণ হারায় চারজন। আরও একজনের মরদেহ জাহাজে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এছাড়া, ডেনিশ নৌবাহিনীর জাহাজে আরও চারজনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ডেনিশ সেনাদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ আনা হলেও তারা তা অস্বীকার করেছে।
সন্দেহভাজনদের একজনকে প্রথমে ঘানায় পাঠানো হয়। সেখানে তার পা কেটে ফেলার পর তাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগের মুখোমুখি হতে ডেনমার্কে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডেনমার্কের বিচার মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া নিরাপদ বলে মনে করছেন না তারা। তবে, অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করা হয়েছে বলে বার্তাসংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন তাদের আইনজীবীরা।
তবে আটক সন্দেহভাজন ব্যক্তির আইনজীবী বিরজিট স্কজডট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ চাপানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, "চারজন ব্যক্তির সঙ্গে এত অসম আচরণ করা ঠিক হতে পারে না।"
প্রথমবারের মতো ডেনমার্ক কোনো সন্দেহভাজন জলদস্যু দলকে তাদের ভূখণ্ডে মুক্তি দিয়েছে। যদিও গিনি উপসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি নেই দেশটির।
কয়েক বছর ধরেই গিনি উপসাগর জলদস্যুতার 'হটস্পট' হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, যথাযথ আইন প্রয়োগের অভাব, দরিদ্র্তাসহ বিভিন্ন কারণ ওই এলাকায় জলদস্যু বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।
তবে, এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় কর্তৃপক্ষ এবং বিদেশী নৌবহর ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
- সূত্র: বিবিসি